মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডিআইজি মিজানকে পুলিশ হেফাজতে দিল হাই কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিআইজি মিজানকে পুলিশ হেফাজতে দিল হাই কোর্ট

অবশেষে পুলিশেরই কব্জায় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান। গতকাল দুর্নীতির মামলায় সাময়িক বরখাস্ত পুলিশের এই প্রভাবশালী কর্মকর্তার আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে তাকে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে হাই কোর্ট। গতকাল বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ মিজানের উপস্থিতিতে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। পরে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ডিএমপির শাহবাগ থানা পুলিশ মিজানকে গ্রেফতার করে হাই কোর্ট থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষেই গত রাত কেটেছে ডিআইজি মিজানের। আজ বিচারিক আদালতে জামিন না মিললে আজ থেকে তার নতুন ঠিকানা কারাগার। অন্যদিকে এ মামলার আরেক আসামি ডিআইজি মিজানের ভাগ্নে পুলিশের এসআই মাহমুদুল হাসানের আগাম জামিনের আবেদনও খারিজ করে তাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মানি লন্ডারিং মামলায় আদালতের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতে তিনি পুলিশি হেফাজতে থানায় থাকবেন। আগামীকাল তাকে আদালতে পাঠানো হবে। ১২ জুন বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত হয় ‘গ্রেফতার হচ্ছেন মিজান-মোয়াজ্জেম’। এরপর দুদকের একটি মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট বলেছিল, ‘মিজান কি দুদকের চেয়ে ক্ষমতাধর? তাহলে কেন তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’ গতকাল আদালতে মিজানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী। দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাফি আহমেদ। এসআই মাহমুদুল হাসানের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম। শুনানিতে মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী বলেন, ‘ডিআইজি মিজান খুবই সৎ একজন পুলিশ অফিসার এবং তিনি সুনামের সঙ্গে সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমন করেছেন। এই বিবেচনায় আসামি জামিন পেতে পারেন।’ এ সময় হাই কোর্ট বলে, ‘সে (মিজান) পুলিশের ভাবমূর্তি পুরোপুরি নষ্ট করেছে। আমরা টিভিতে দেখেছি, (দুদকের একজন পরিচালককে) ঘুষ দেওয়ার ব্যাপারে সে ডেসপারেট বক্তব্য দিয়েছে। তার জামিন হবে না। আমরা তাকে পুলিশে দেব।’ শুনানি শেষে জামিন নাকচ করে হাই কোর্ট আদালতে উপস্থিত মিজানকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। ডিআইজি মিজান ও দুদকের বাসিরকে ফের তলব : পুলিশের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাসিরকে দুদকে আবারও তলব করা হয়েছে। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগের তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিআইজি মিজানকে ৮ জুলাই ও বাসিরকে ১০ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে গতকাল নোটিস দেওয়া হয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কার্যালয় বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছে। এ ছাড়া ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিআইজি মিজানের গাড়িচালক সাদ্দাম হোসেন ও দেহরক্ষী হৃদয় হাসানকে ৭ জুলাই হাজির হতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর