বুধবার, ৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

সেমির স্বপ্ন ভাঙল

সেমির স্বপ্ন ভাঙল

উইকেট শিকারের পর উল্লাস -এএফপি

জাসপ্রিত বুমরাহর পরপর দুই বলে বোল্ড রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান! হতাশায় মাথায় হাত দিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। দুর্দান্ত লড়াই করেও শেষটা যে মনমতো হলো না। সাইফউদ্দিন নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকতেই অলআউট হয়ে গেল বাংলাদেশ। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ২৮ রানে জিতে সেমিফাইনালে উঠে গেল ভারত। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে গেল টাইগারদের।

বার্মিংহামের এজবাস্টনে কাল প্রথমে ব্যাট করে রোহিত শর্মার সেঞ্চুরি ও লোকেশ রাহুলের হাফ সেঞ্চুরিতে ৩১৪ রান করেছিল ভারত। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৮৬ রানেই আটকে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের সম্ভাবনা ছিল টাইগারদের। হাতে উইকেট না থাকায় ১২ বল আগেই ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটে। ৩৮ বলে ৫১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেছেন সাইফউদ্দিন। সাকিব আল হাসান এ ম্যাচেও দুর্দান্ত। ব্যাট হাতে খেলেছেন ৬৬ রানের আরও একটি জাদুকরী ইনিংস। বোলিংয়েও ছিলেন অসাধারণ। রান বন্যার দিনে ১০ ওভারে মাত্র ৪১ রান দিয়ে নিয়েছেন ১টি উইকেট। সাত ম্যাচে সাকিবের রান এখন ৫৪২। তার চেয়ে মাত্র দুই রান বেশি রোহিত শর্মার। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের উইকেট সংখ্যা ১১। এ আসরে সেরা খেলোয়াড় হওয়ার প্রধান দাবিদার। গতকাল দারুণ একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন সাকিব, বিশ্বকাপের এক আসরে ১০ উইকেট ৫০০ রান! ক্রিকেট এমনই এক অনিশ্চয়তার খেলা, কখনো কখনো এক বলেই বদলে যায় খেলার ম্যাচের চেহেরা! ৪৪তম ওভারের প্রথম বল! সাব্বির রহমান বোল্ড। বুমরাহর ইয়র্কারে বল লেগ স্ট্যাম্পে আঘাত করে। এই এক বলেই ম্যাচ থেকে যেন ছিটকে যায় বাংলাদেশ। সাব্বির করেন ৩৬ বলে ৩৬ রান। সাইফউদ্দিনের সঙ্গে তার জুটিটা ছিল ৬৬ রানে। তবে এই হারের ব্যবচ্ছেদ করলে সামনে আসবে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা। রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে যেভাবে শুরু করা দরকার তা হয়নি। এ ম্যাচেও ব্যর্থ তামিম ইকবাল। ৩১ বলে করেছেন মাত্র ২২ রান। পুরো বিশ্বকাপেই ফ্লপ ড্যাসিং ওপেনার। সৌম্য সরকার ব্যর্থ। ৩৩ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে যেভাবে আউট হয়েছেন তা রীতিমতো দৃষ্টিকটু। এরপর শুরু হয় সাকিবের লড়াই। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার একপ্রান্ত আগলে লড়াই করছিলেন অন্যপ্রান্তে একের পর এক উইকেট পড়ছিল। এক সময় নিজেও মনোযোগ হারিয়ে ফেলেন। তবে এমন হারের দিনেও প্রশংসা পেতে পারেন মুস্তাফিজুর রহমান। গতকাল ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তার দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্যই তো ভারত তাদের ব্যাটিংয়ে শেষের দিকে সুবিধা করতে পারেননি। ম্যাচের প্রথম ২৫ ওভারে বিনা উইকেটে ১৬২ রান করা ভারত, ১০ উইকেট হাতে রেখেও পরের ২৫ ওভার থেকে করতে পেরেছে ১৫২ রান। ৪০০ রানের স্বপ্ন দেখেও ভারত আটকে যায় ৩১৪ রানে। ‘ভয়ঙ্কর’ হয়ে ওঠা ভারতকে আটকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ের কল্যাণেই। গতকাল ৫৯ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন কাটার মাস্টার। দুর্দান্ত একটি রান আউট করেছেন তিনি। তবে মুস্তাফিজের উইকেট সংখ্যা আরেকটি বাড়তে পারত, যদি ম্যাচের পঞ্চম ওভারে তামিম ইকবাল ডিপ স্কোয়ার লেগে রোহিত শর্মার সহজ ক্যাচটি মিস না করতেন। ৯ রানে নতুন জীবন পাওয়া ভারতীয় ওপেনার কাল খেলেছেন ৯২ বলে ১০৪ রানের ইনিংস। এটি চলতি বিশ্বকাপে রোহিতের চতুর্থ সেঞ্চুরি। কাল এজবাস্টনের এই সেঞ্চুরি স্পর্শ করেছেন লঙ্কান তারকা কুমার সাঙ্গাকারার রেকর্ড। এর আগে এক বিশ্বকাপে কেবল তারই ছিল চার সেঞ্চুরি। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন এই রোহিতই।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর