রবিবার, ৭ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

শাস্তি না হওয়ায় অপরাধ বাড়ছে

মালেকা বানু

নিজস্ব প্রতিবেদক

শাস্তি না হওয়ায় অপরাধ বাড়ছে

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেছেন, অপরাধীকে বুঝতে হবে সে অপরাধ করছে। অপরাধের জন্য তার শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হওয়ায় ধর্ষণ, খুন বাড়ছে। রেহাই পাচ্ছে না কোমলমতি শিশুও। আগে এমনটা ছিল না। অনেক দিন ধরে এ ঘটনাগুলো বেড়ে চলছে।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, আগে বাবা-মায়ের পরে শিক্ষক ছিল সবচেয়ে নিরাপত্তার জায়গা। এখন তা নেই। শিক্ষকের হাতে ধর্ষিত হচ্ছে সন্তানতুল্য ছাত্রীরা। সংবাদপত্র খুললে প্রতিদিনই শিশু হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসছে। তারপরও অধিকাংশ ঘটনাই প্রকাশ পাচ্ছে না। আমরা প্রতিবাদ করছি। এ ব্যাপারে হাই কোর্ট একটা রুলও দিয়েছে। তারপরও এগুলো থামছে না। যে অপরাধী তাকে তো শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সেই জায়গাটাতেই তো গলদ। অপরাধী দেখছে আমি অপরাধ করলেও শাস্তি হচ্ছে না। ফলে সে লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে। অন্য অপরাধীদেরও এটা দেখে সাহস বাড়ছে। আজ শিক্ষকদের কাছে শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ কেন? কারণ, আমাদের শিক্ষক নিয়োগের জায়গাটাই প্রশ্নবিদ্ধ। নিয়োগের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষকের ক্রাইটেরিয়া যদি হয় দলীয় আনুগত্য, রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড, ওপর মহলের সুপারিশ, মানুষ তাকে ভয় পায় কিনা- তাহলে সেই শিক্ষকের কাছ থেকে আপনি কী আশা করবেন? সবকিছু মিলিয়ে আজ এ পরিস্থিতি, যার ফল আমরা ভোগ করছি। শুধু পরিবার বা সমাজসচেতন হলেই হবে না, রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।

বরগুনার বিষয়টি দেখেন। সবার চোখের সামনে একটা মানুষকে কুপিয়ে মেরে ফেলল। কী রকমের একটা পরিবেশের মধ্যে বাস করছি আমরা। আবার খুনি ক্রসফায়ারে মারা গেল। ফলে মূল হোতা যারা তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেল। এসব অপরাধের জন্য শুধু পারিবারিক শিক্ষাকে দায়ী করলে হবে না। কারণ পরিবার তাকে কতক্ষণ আগলে রাখতে পারে। সে পরিবার থেকে বেরিয়ে সমাজের মধ্যে গিয়ে পড়ছে। রাজনীতির মধ্যে গিয়ে পড়ছে। ঘর থেকে বেরিয়ে যেখানে গিয়ে সে পড়ছে সেই জগৎটা যদি ঠিক না হয় তাহলে এসব অপরাধ কমবে না। সবার আগে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়ত সামাজিকভাবে তাকে বয়কট করতে হবে। পরিবার থেকে বয়কট করতে হবে। কিন্তু হচ্ছে উল্টো। পরিবার তার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, প্রশাসন তার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে, রাজনীতি তার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে। তাহলে অপরাধ কমবে কীভাবে? ইদানীং বাবা-মায়ের হাতেও অনেক শিশু হত্যা হচ্ছে। এটার পেছনে হতাশা একটা বড় কারণ। একদিকে উন্নয়ন হচ্ছে, অন্যদিকে বৈষম্য বাড়ছে। একটা পক্ষ দ্রুত উঠে যাচ্ছে, আরেকটা পক্ষ তাকিয়ে দেখছে। সব মিলিয়ে সমাজের বিশাল অংশ হতাশায় ভুগছে। মানসিক অস্থিরতা থেকে পারিবারিক হত্যার ঘটনা বাড়ছে।

সর্বশেষ খবর