সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারকে ফিরিয়ে নিতে হবে। তবে তাদের প্রত্যাবাসন হতে হবে অবশ্যই নিরাপদ এবং স্বেচ্ছামূলক। রাখাইনে তাদের স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ দিতে হবে। নাগরিত্বের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। মানবাধিকারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ ব্যাপারে আশিয়ানভুক্ত দেশগুলো মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আশিয়ানভুক্ত দেশগুলো খুবই উদ্বিগ্ন। তিনি গতকাল রোববার দুপুরে উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে জামতলী মার্সি মালয়েশিয়া হসপিটালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাছে পরিষ্কার চিত্র হচ্ছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা হয়েছে। জাতিগত নিধন করা হয়েছে। রোহিঙ্গা মুসলমানরা ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যে কারণে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশের এ কক্সবাজার অঞ্চলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। শুধু তাই নয়, একই কারণে মিয়ানমারের রাখাইনেও দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে নিজ দেশেই ক্যাম্প জীবন-যাপন করছে। মালয়েশিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সকালে প্রথমে উখিয়ার মালয়েশিয়ান ফিল্ড হসপিটাল পরিদর্শন করেন। সেখানে রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা কার্যক্রম দেখেন। এ সময় তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি পালংখালী ১৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এরপর দুপুরে জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শ করেন। সেখানে মার্সি মালয়েশিয়া হসপিটালে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে তিনি রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।

তিন দিনের সফরে গত শনিবার ঢাকা এসেছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ। শনিবার ঢাকার মালয়েশিয়ান দূতাবাসের অভ্যন্তরীণ একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে বিকালের ফ্লাইটে তিনি কক্সবাজার যান। গতকাল বিকাল পর্যন্ত তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় কাটান। সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরে তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের রোহিঙ্গা সংকটসহ দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এটাই প্রথম সফর সাইফুদ্দিন আবদুল্লার। মূলত রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই মালয়েশিয়া বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এ সংকটের আশু সমাধান চেয়েছেন।  মালয়েশিয়ার বিদেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করবে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে সুদৃঢ় বাণিজ্যিক সম্পর্ক। ২০১৮ সালে উভয় দেশের মধ্যে প্রায় ২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য সম্পাদিত হয়েছে। এটি তার পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় শতকরা ৩৫ দশমিক ৪ ভাগ বেশি। চলতি বছর দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি বর্তমানে মালয়েশিয়ায় কর্মরত রয়েছেন।

সর্বশেষ খবর