মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

অর্থ পাচার ঠেকাতে রাজনৈতিক অঙ্গীকারে গুরুত্ব এপিজির

নিজস্ব প্রতিবেদক

মানি লন্ডালিং কিংবা অর্থ পাচার রোধে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকারকে গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এপিজি)। ঢাকা সফররত সংস্থাটির প্রতিনিধি দল গতকালও ব্যস্ত সময় পার করেছে। এ সময় তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ইউনিট, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেছে। অর্থ পাচারের রুট হিসেবে সন্দেহজনকভাবে চিহ্নিত আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েস ঠেকাতে ব্যবসাসহ কাস্টমস সংশ্লিষ্টদের আরও সতর্ক থাকার পাশাপাশি তদারকি ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এসব ক্ষেত্রে যে কোনো দেশকে সফল হতে হলে সবার আগে রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন বলে মনে করে এপিজি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কি পরিমাণ পণ্য বিদেশে যাচ্ছে ও কি পরিমাণ পণ্য বিদেশ থেকে দেশে আসছে এবং সেসব পণ্যের বিপরীতে কি পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে এপিজি এ বিষয়ে তদারকি বাড়াতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এপিজিকে বলেছে, আমদানিকৃত পণ্যের গরমিল থাকলেই যে অর্থপাচার হবে তা নয়, তবে এটা একটা অসঙ্গতি। এই অসঙ্গতি দূর করতে বন্দরগুলোতে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির স্ক্যানিং ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করতে আগামী তিন বছরের জন্য একটি অ্যাকশন প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছে। এতে কিছু আইনকানুন শক্তিশালীকরণ ও বন্দরগুলোর অবকাঠামোর উন্নয়ন, নতুন নতুন প্রযুক্তির সংযোজন এবং প্রাতিষ্ঠানিক অবস্থার উন্নয়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে। যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশ জাতীয় কৌশলপত্র (২০১৯-২০২১) প্রণয়ন করেছে। এপিজির প্রতিনিধিদের সামনে ওই  কৌশলপত্র তুলে ধরা হয়। বলা হয়, অপরাধ সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা আইন-২০১২ এর আওতায়  কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি পৃথক সেল গঠন করা হয়েছে। এ সেল থেকে বহির্বিশ্বে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশ অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বৈশ্বিক সূচকে ২০১৬ সালেও যে অবস্থানে ছিল এখনো মোটামুটি সে অবস্থানেই রয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ সংস্থা এপিজি, এএমএলসি, এগমন্ট গ্রুপ, এফএটিএফের বিবেচনায়ও বাংলাদেশের অর্থ পাচার ও মানি লন্ডারিং পরিস্থিতি মোটামুটি সন্তোষজনক রয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার জন্য ফিলিপাইনকে দায়ী করার পাশাপাশি বাংলাদেশকে সতর্ক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কিছুটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা থাকতে পারে বলে মনে করে এপিজি। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ বাড়ার কারণও জানতে চেয়েছে সংস্থাটি। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্বায়নের এ যুগে বাংলাদেশও কিছুটা প্রভাবিত হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগও নিয়েছে। সেগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরা হয় অ্যাকশন প্ল্যানে।

সর্বশেষ খবর