বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বুদ্ধিজীবীরা চামচাগিরি করছেন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বুদ্ধিজীবীরা চামচাগিরি করছেন

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

‘বুদ্ধিজীবীরা এখন যথাযথ ভূমিকা পালন করছেন না’ মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, বুদ্ধিজীবীদের মানুষকে পথ দেখানোর কথা। কিন্তু তারা চামচাগিরি করেন, বিশ্বাসঘাতকতা করেন। আবার দায়িত্ব পালন না করে উল্টোটা করেন, এটাই এখন বাংলাদেশের বাস্তবতা। গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশ : কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির চালচিত্র’ শীর্ষক এক স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এ কথা বলেন। নাজমুল করিম স্টাডি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে এবারের স্মারক বক্তা ছিলেন লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ। এ সময় সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. নেহাল করিম উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের দৃশ্যমান অনেক উন্নতি আছে, অবকাঠামোগত উন্নতি আছে, জিডিপির পরিসংখ্যান আছে, বিদেশি প্রশংসা আছে। কিন্তু ভিতরে দুর্দশা হচ্ছে শিশুর। যে শিশু খেলতে চেয়েছিল, খেলতে গিয়ে ধর্ষিত হলো, খেলতে গিয়ে প্রাণ হারাল। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের বাস্তবতা। এই বাস্তবতাতেই প্রতিফলিত হচ্ছে, এই রাষ্ট্র নৃশংস, এই রাষ্ট্র আমলাতান্ত্রিক।’ ‘রাষ্ট্রে পুঁজিবাদী চরিত্র আরও বিকশিত হয়েছে’ মন্তব্য করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ক্ষমতা যখন একজনের হাতে চলে যায়, সেটা আমরা পাকিস্তান আমলে দেখেছি, ৪৬ বছর ধরে বাংলাদেশের ইতিহাসে দেখছি। এই রাষ্ট্রের আমলাতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী চরিত্র আরও বিকশিত হয়েছে, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আর এ কারণেই আমাদের আজকের এই দুর্দশা, আমরা কোনো আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না। তবে এই ব্যবস্থা শুধু কর্তৃত্ববাদী নয়, এটা পিতৃতান্ত্রিক, পুঁজিবাদী ও ফ্যাসিবাদী। এর আগে স্মারক বক্তৃতায় লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখন বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের মধ্যে পদ-পদবি-পদকের মোহ এত বেশি যে, তারা রাজনীতিবিদদের তথা রাজনৈতিক দলগুলোর মোসাহেবে পরিণত হয়েছেন। বুদ্ধিজীবীদের অধঃপতনের আরেকটি কারণ বা অনুষঙ্গ হলো সামাজিক আন্দোলন থেকে দূরে থাকা।’  তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের সদস্য হতে পারলে অনেক অর্থ, বিত্ত আর প্রতিপত্তির মালিক হওয়া যায়। এ কারণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও এক ধরনের মাস্তানতন্ত্র জেঁকে বসেছে। এ জন্য সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীকে খুন করতেও তাদের হাত কাঁপে না। অন্য দল ও নিজ দলের ভিতরে বিরোধ ও খুনখারাবি এখন ডালভাত। ক্ষমতার স্বাদ পেতে তারা সবাই মরিয়া।

সর্বশেষ খবর