রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

কারা হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন

স্বপ্নের ফাইনাল আজ

কারা হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন

ক্রিকেটীয় মেধা-মনন, শক্তি-সামর্থ্য, কন্ডিশন- সবকিছু বিবেচনায় নিলে আজ লর্ডসের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল হতে যাচ্ছে ‘খরগোশ ও কচ্ছপ’-এর প্রতিযোগিতার মতো! দল হিসেবে ইংল্যান্ডের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের পার্থক্য অনেক। গল্পের খরগোশের মতো নিজেরা বোকামি না করলে ইংলিশদের হারানো কঠিন! তবে কচ্ছপের মতো নিউজিল্যান্ডের আত্মবিশ্বাস তাদের একাগ্রতা ও ধারাবাহিকতায়। যে মন্ত্রে তারা হাজারো বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে আজ ফাইনাল খেলছে, একই মন্ত্রে উদ্দীপ্ত হয়ে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে চায় নিউজিল্যান্ড। তবে আজ দুই দলই লড়াই করবে এক স্বপ্নের জন্য। তা হচ্ছে শিরোপা। প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নয় ম্যাচের মধ্যে সাতটিতেই জিতেছে ইংল্যান্ড। তার মধ্যে আছে এই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ডারহামের রিভারসাইডে পাওয়া ১১৯ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়টিও। কিন্তু ‘হোম অব ক্রিকেট’ লর্ডসের ইতিহাস কথা বলছে ব্ল্যাক ক্যাপসদের পক্ষেই। এ মাঠে এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুবারের দেখায় প্রতিবারই হেরেছে ইংল্যান্ড। ২০১৩ সালে ৫ উইকেটে এবং ২০০৮ সালে পাওয়া ৫১ রানের জয় দুটি থেকেই অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে পারেন কিউইরা। এ ছাড়া লর্ডসে আরেকটি ম্যাচ খেলেছিল নিউজিল্যান্ড, সেটিতেও তারাই জিতেছে। লর্ডস যেন নিউজিল্যান্ডের জন্য ‘লাকি ভেন্যু!’

তবে এও ঠিক, ইংলিশরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলা প্রদর্শন করতে পারলে যে কোনো ভেন্যুকেই নিজের করে নিতে পারে। তা ছাড়া এই লর্ডসের আলো-বাতাসেই তো খেলে খেলে বড় হয়েছেন ইংলিশ ক্রিকেটাররা। তাই এ মাঠে কোনো রেকর্ডই তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তবে শুধু বিশ্বকাপের পরিসংখ্যান দেখলে লর্ডসের ইতিহাস কিন্তু স্বাগতিকদেরই বেছে নেবে! কেননা, এ মাঠে এর আগে ছয়টি বিশ্বকাপ-ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড। এর চারটিতেই জিতেছে। আজকের ফাইনাল ম্যাচটি ইংলিশদের জন্য লর্ডসে ‘লাকি সেভেন!’

দুই দলের আসল লড়াইটা হবে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ও নিউজিল্যান্ডের বোলিংয়ের মধ্যে। এখানেই দল দুটি সমানে সমান। জো রুট (৫৪৯ রান), জেসন রায় (৪২৬), জনি বেয়ারস্টো (৪৯৬), বেন স্টোকস (৩৮১), ইয়ন মরগান (৩৬২)- একেকজন ‘বিস্ফোরক’ ব্যাটসম্যান ইংল্যান্ড দলে। তবে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের কীভাবে আটকে দিতে হয় তা খুব ভালো করেই জানেন কিউই বোলাররা। লকি ফার্গুসন (১৮ উইকেট), ট্রেন্ট বোল্ট (১৭ উইকেট), ম্যাট হেনরি (১৩ উইকেট), জিমি নিশামরা (১২ উইকেট) প্রস্তুত হয়েই আছেন।

তবে ইংল্যান্ডের বোলিংও বিশ্বমানের। সে তুলনায় খানিকটা পিছিয়ে থাকবে কিউইদের ব্যাটিং লাইনআপ। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও রস টেলরকে ঘিরেই তাদের আশা। গত বিশ্বকাপে ডাবল সেঞ্চুরি করা মার্টিন গাপটিল এখনো নিজের ফর্মে ফিরতে পারেননি। হয়তো আজও তার দিকে তাকিয়ে থাকবে কিউই। কেননা, এই ওপেনারের ব্যাট হাসলে একাই প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে তাদের আটকে দেওয়ার জন্য ইংল্যান্ডের আছে জোফরা আর্চার, মার্ক উট, ক্রিস ওকস ও বেন স্টোকসের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী বোলিং লাইনআপ। তাই সামর্থ্যরে দিক থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে থেকেই আজ মাঠে নামছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। তার পরও অনিশ্চয়তার ক্রিকেটে আগে থেকে কিছুই বলা যায় না।

সার কথা হচ্ছে, গল্পের খরগোশ কিন্তু পরাজিত হয়েছিল কচ্ছপের কাছে! ইংল্যান্ড কি পারবে সদাসতর্ক থেকে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে ‘খরগোশ ও কচ্ছপ’ গল্পের শেষ দৃশ্যটুকুর ভুল প্রমাণ করতে? নাকি শেষ পর্যন্ত জয় কচ্ছপরূপী নিউজিল্যান্ডেরই হবে! তবে যে দলই জিতুক না কেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার পর আজ ক্রিকেটবিশ্ব যে নতুন আরেক চ্যাম্পিয়ন দলকে পাচ্ছে- তা তো নিশ্চিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর