শিরোনাম
রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিভাগীয় শহরে শোডাউন করবে বিএনপি

মাহমুদ আজহার

বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। ঈদুল আজহার আগেই আট বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করতে চায় দলটি। এরই মধ্যে কয়েকটি বিভাগের সমাবেশের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়েছে। বেগম জিয়ার কারামুক্তির পাশাপাশি তার সুচিকিৎসা ও নতুন নির্বাচনের দাবিও থাকবে এসব সমাবেশ থেকে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যাপক লোক সমাগমের চেষ্টা করছে বিএনপি। গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ হবে সবশেষে। অনুমতি পেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশের আয়োজন করা হবে।

জানা যায়, ১৮ জুলাই বরিশাল, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৫ জুলাই খুলনায় সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। ২৯ থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে যে কোনো দিন রাজশাহী বিভাগে সমাবেশ হবে। এ ছাড়া আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেট ও রংপুর বিভাগের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এসব সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সমাবেশের সত্যতা নিশ্চিত করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা আগামী ঈদের আগেই আট বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করব। ইতিমধ্যে কয়েকটি বিভাগে সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হয়েছে। জানা যায়, এরই মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করতে প্রস্তুতি সভা শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রস্তুতি সভায় অংশ নিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে সমাবেশকে আমরা মহাসমুদ্রে পরিণত করতে চাই। গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আমাদের মুক্ত করতে রাজপথেই থাকতে হবে। আশা করি, সরকার এতে বাধা দেবে না। জনদাবি মেনে নিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্তি দেবে।’ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর দল পুনর্গঠনের কাজে মনোযোগ দেয় বিএনপি। যে কারণে গত ছয় মাসে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি দেয়নি দলটি। কেন্দ্রীয়ভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে শুধু মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। সূত্র জানায়, বিভাগীয় শহরে বিশাল সমাবেশ করে তৃণমূলকে চাঙ্গা করতে চায় বিএনপি। দলের সিনিয়র নেতারা কে কোথায় দায়িত্ব পালন করবেন তা-ও ঠিক করা হয় গতকালের বৈঠকে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিভাগীয় নেতারা সার্বিক সহযোগিতা করবেন। এরই মধ্যে কেন্দ্রে থাকা বিভাগীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকায় প্রস্তুতি সভা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আমরা আশা করছি এ সমাবেশের মধ্য দিয়েই ঝিমিয়ে পড়া তৃণমূল নেতা-কর্মীরা আবার চাঙ্গা হবে। সরকারকে বেগম জিয়ার মুক্তি দাবি আদায়ে বাধ্য করা হবে। জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে চাপে রাখা হবে। পাশাপাশি আইনি লড়াইও চালিয়ে যাবে বিএনপি। আন্তর্জাতিক মহলেও নতুন করে যোগাযোগ বাড়ানো হবে। সরকার হস্তক্ষেপ না করলে শিগগিরই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেনও বলে আশা করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাশেম বকর বলেন, ২০ জুলাই আমরা সমাবেশ করব। ইতিমধ্যে লালদীঘির ময়দানের অনুমতি চেয়ে প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। সেখানে অনুমতি না পেলে জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বর অথবা কাজীর দেওড়ির মোড়ে সমাবেশ করব। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জাতীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ২৫ জুলাই আমরা সমাবেশ করছি। ইতিমধ্যে নগরের হাদিস পার্ক, সোনালী ব্যাংক চত্বর ও শিববাড়ীর মোড়- এই তিনটি ভেন্যুর যে কোনো একটি চেয়ে প্রশাসনের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বরিশাল বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, সমাবেশ করতে কেন্দ্র থেকে আমরা নির্দেশনা পেয়েছি। আশা করছি, সরকার কোনো বাধা দেবে না। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, সব শেষে ঢাকা বিভাগীয় শহরে সমাবেশ হবে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হবে। সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন দীপন বলেন, আমরা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সমাবেশ করতে চাই।

সর্বশেষ খবর