সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, অর্থ পাচার ঠেকাতে হলে এর পথ বন্ধ করতে হবে। যে কারণে পাচার হচ্ছে সেই কারণগুলো খতিয়ে দেখা উচিত। অনৈতিক আয়ের অর্থ দেশের বাইরে পাচার হয়ে যায়। এ ছাড়া বিনিয়োগ পরিবেশ জটিলতার কারণেও অর্থ পাচার হয়। যারা অনৈতিক আয় করে তাদের আটকাতে হবে। অর্থ পাচারের মতো খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রেও দেখা যায় ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা আইনের অপব্যবহার করে ইচ্ছাকৃতভাবে বছরের পর বছর খেলাপি হচ্ছেন। তাদেরও আটকানো দরকার। কর্তৃপক্ষ এ দুটি বিষয়ের ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি করলেই ভবিষ্যতে এগুলো ঠেকানো সম্ভব হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লর রহমান বলেন, সরকারের সামনে রাজনৈতিক কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। রাজনৈতিক অস্থিরতাও নেই। তাহলে আর্থিক খাতে কেন উন্নতি হবে না। কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে ডুয়িং বিজনেস সূচক উন্নত হচ্ছে না। অর্থাৎ বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়ন হচ্ছে না। আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ নানা ধরনের সংকট রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক ঋণের সুদ হার বেশি। ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে। এগুলো অর্থ পাচারের ক্ষেত্র তৈরি করে। মানুষ সহজে বিনিয়োগ না করতে পারায় বিদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়। তাই পাচার ঠেকাতে হলে বিনিয়োগে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। এর বাইরে যারা অনৈতিক আয় করে, তারা অর্থ পাচার করে। সুশাসন না থাকায় ক্ষমতার সঙ্গে জড়িতরা আইনের অপব্যবহার করেই অনৈতিক আয় করেন। এ অনৈতিক আয়ের ওপর হাত দিতে হবে। অনৈতিক আয় ঠেকানো জরুরি। পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা খুবই দুরূহ। ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করে কাজ করা উচিত, যাতে টাকা পাচার না হয়। তিনি বলেন, আইনের শাসনের অভাবে ঋণ পেতে ভোগান্তি, ব্যাংক ঋণের উচ্চ হার খেলাপি হওয়ার অন্যতম দুটি কারণ। এ দুটি কারণ সমাধান করা জরুরি। তাতে যারা অনিচ্ছাকৃত খেলাপি হচ্ছে তারা আর হবে না। তবে এদের একটি বড় অংশ ইচ্ছে করেই নানা উপায় অপব্যবহার করে ব্যাংকের টাকা ফেরত দেয় না। ঋণ দেওয়া এবং আদায়ের ক্ষেত্রে যদি কোনো রাজনৈতিক প্রভাব না থাকে, তাহলে খেলাপির সংখ্যা কমানো সম্ভব। যে আইন রয়েছে এ আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। সঠিক মনিটরিংয়ের মাধ্যমে আইনগুলো যাতে অপব্যবহার না করতে পারে সে জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।