বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

আমরা কোনো ব্র্যান্ডের বিপক্ষে নই

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমরা কোনো ব্র্যান্ডের বিপক্ষে নই

অধ্যাপক আ ব ম ফারুক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেছেন, ‘দুধ প্রক্রিয়াজাত করার সময় ত্রুটির কারণে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও হরমোন আসতে পারে। কারখানাগুলোয় মান নিয়ন্ত্রণে ও পাস্তুরিত দুধ প্যাকেটজাত করার সময় আরও সতর্ক থাকলেই এ সমস্যা হবে না। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করলেই হবে। আমরা কোনো ব্র্যান্ড বা কোম্পানির বিরুদ্ধে নই। আমরা চাই দেশীয় দুগ্ধশিল্প বিকশিত হোক। বিদেশি দুধের বাজার তৈরি হোক- তা আমরা চাই না। রাতারাতি আমাদের বিদেশি এজেন্ট বানানো যাবে না।’ রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে গতকাল ‘ঢাবি অধ্যাপকের পাস্তুরিত দুধ নিয়ে গবেষণা : জনস্বার্থে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, জনউদ্যোগ, বিসিএইচআরডি, সুবন্ধন, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, এএসবিডি ও গ্রিনফোর্স যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে। সভায় সভাপতিত্ব করেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। ভেজাল ওষুধ ও খাদ্য নিয়ে সোচ্চার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের সাবেক ডিন ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ ব ম ফারুক সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভোক্তার প্রত্যাশা ও কোম্পানির স্বার্থের মধ্যে সমন্বয় করে কথা বলুন। রাগারাগি করে এ সমস্যার সমাধান হবে না। আমার বুঝে আসে না, সরকারি কর্মকর্তারা ভোক্তাদের পক্ষে কথা না বলে কোম্পানির পক্ষে কথা কেন বলবেন!’ এ সময় তিনি কোম্পানিগুলোকে ব্যবস্থাপনার দিকে একটু মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। দুধের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে সরকারের এক অতিরিক্ত সচিবের সমালোচনার জবাবে অধ্যাপক ফারুক বলেন, ‘তিনি প্রশ্ন তুলেছেন পিআর রিভিউ জার্নালে প্রকাশ হওয়ার আগে কেন গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো। তিনি হয়তো জানেন না, প্রকাশের জন্য পিআর রিভিউতে মৌলিক গবেষণা দিতে হয়। আমি যা করেছি, তা দুধে পানি ছিল কিনা, তা বের করার গবেষণা। সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক আছে। এটা মৌলিক গবেষণা নয়।

এ ছাড়া পিআর জার্নালে গবেষণা প্রকাশ হতে এক থেকে দেড় বছর লাগে। সেই জার্নালে প্রকাশের পর যদি আমি এই ফলাফল প্রকাশ করতাম, তাহলে জনগণ কি আমাকে ক্ষমা করত? পৃথিবীর কোনো দেশে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক ইস্যুগুলো পিআর জার্নালের মাধ্যমে আসতে হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দোষারোপের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে হবে।’ ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক এম আবু সাইদ বলেন, ‘একজন সচিব একজন বিজ্ঞানী ও শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিষোদগার করার স্পর্ধা কী করে পান- এ প্রশ্ন সবার কাছে। দুধে যে হরমোন বা অ্যান্টিবায়োটিক এলো, এটা গাভির মধ্যে কিনা বা কোন পর্যায় থেকে আসছে, তাও গবেষণা করে বের করতে হবে। এর মূল কোথায়, তাও বিবেচনায় আসা উচিত।’ সভাপতির বক্তব্যে আবু নাসের খান বলেন, ‘দুধের নামে আমরা দুধ খাচ্ছি, নাকি অন্য কিছু খাচ্ছি? খাদ্য নিয়ে আমরা প্রায় সবাই উদ্বিগ্ন। ২০০৫ সাল থেকে আমরা নিরাপদ ও বিষমুক্ত খাদ্যের দাবিতে আন্দোলন করছি। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো আমাদের আরও উদ্বিগ্ন করেছে।’

সর্বশেষ খবর