শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
খুলনায় বিএনপির সমাবেশে বক্তারা

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই

খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে গতকাল বিকালে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপি নেতারা বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছে। অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে উদ্ধার আর ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

দলের কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকালে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে সমাবেশে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন। সমাবেশে খুলনা মহানগর ও জেলাসহ বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, নড়াইল ও মাগুরার বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়ার প্রতিকৃতি সংবলিত প্লাকার্ড ও মিছিল নিয়ে যোগ দেয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু।

মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি ও জেলা সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খানের পরিচালনায় বক্তৃতা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম নুরুল ইসলাম, মসিউর রহমান, সৈয়দ মেহেদী আহামেদ রুমী, কবির মুরাদ, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, শামীমুর রহমান শামীম, জেলা বিএনপি সভাপতি শফিকুল আলম মনা প্রমুখ। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যিনি গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করলেন, ১৯৭১ সালে পাক সেনাবাহিনীর হাতে দুই শিশু সন্তানসহ বন্দী থাকলেন, জনগণের ভোটে তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী আজকে কারাগারের অন্ধকারে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। সরকারের সদিচ্ছার অভাবে তাকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। তিনি এখন হাত-পা সোজা করতে পারছেন না। অবিলম্বে সুচিকিৎসার জন্য তাকে মুক্তি দেওয়া হোক। তিনি বলেন, অবরুদ্ধ গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারকে বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছে। বিচার বিভাগকে তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একের পর এক ব্যাংকগুলো ও শেয়ার মার্কেট লুট হয়েছে। দেশে আজ ভয়াবহ সংকট চলছে। তিনি বলেন, দিনদুপুরে আদালতে বিচারকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ধর্ষণ একটা সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্যাতনকারীদের হাত থেকে মা-বোনেরা আজ কেউ নিরাপদ নয়। সরকারি দলের ছত্রছায়ায় অপরাধীদের প্রশয় দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে।

বিএনপি নেতারা বলেন, বাংলাদেশকে নতজানু করে রাখতে আন্তর্জাতিকভাবে চক্রান্ত শুরু হয়েছে। প্রিয়া সাহাকে কেন্দ্র করে কী চক্রান্ত হচ্ছে আমরা তা জানতে চাই। তারা বলেন, খালেদা জিয়াকে যে মামলায় আটকে রাখা হয়েছে তার কোনো ভিত্তি নাই। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে সবাইকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এদেশের মানুষ কখনো পরাজয় স্বীকার করেনি। আমরা আমাদের সব দাবি আদায় করেছি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। এখনো আমাদের অধিকার আমাদেরই প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ এর আগে সর্বশেষ খুলনায় ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে নগরীর হেলাতলা মোড়ে সমাবেশ করেছিল বিএনপি। এরপর যেসব কর্মকা  হয়েছে তা শুধুই দলীয় কার্যালয়ের সামনেই।

সর্বশেষ খবর