মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

সম্পাদকদের সঙ্গে মেয়রের মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদের পরিকল্পনা, নিতে এবং মশা নিধনে দ্রুত কার্যকর হয়, এমন ওষুধ আমদানি কার্যক্রম জোরদার করতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সম্পাদকবৃন্দ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। গতকাল রাজধানীর গুলশান ক্লাবে গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে ‘ডেঙ্গু মোকাবিলা ও পরিচ্ছন্ন নগরী বিনির্মাণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রতিদিনের সংবাদ সম্পাদক রাহাত খান, ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম সম্পাদক জুয়েল মাজহার, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, গাজী টেলিভিশন ও সারাবাংলাডটনেটের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদসহ সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ। রাহাত খান বলেন, আমরা অনেকটা যুদ্ধের মধ্যে আছি। ক্ষুদ্র একটি প্রাণী গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিচ্ছে। এই যুদ্ধে নাগরিকদের বড় ভূমিকা রয়েছে। ইকবাল সোবহান চৌধুরী ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ে গবেষণার জন্য একটি সেল গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ডেঙ্গু রোগের ধরন পাল্টাচ্ছে তাই এটা নিয়ে আমাদের গবেষণা করতে হবে। এনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, ভোটের সময় কাউন্সিলররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছেন। এখন নিজেদের সেলিব্রেটি ভাবলে সমস্যা। মুস্তাফিজ শফি বলেন, ডেঙ্গুবাহী মশা কোথায় বংশবিস্তার করে সে বিষয়ে বিভ্রান্তি আছে। মানুষের বিভ্রান্তি দূর করে সচেতন করতে হবে। নঈম নিজাম বলেন, মশার ওষুধে সিন্ডিকেট তৈরি এবং এর আশ্রয়-প্রশ্রয় ভাঙতে হবে। যারা দায়িত্বে আছেন কথাবার্তা বলার সময় তাদের সতর্ক থাকতে হবে। মানুষ সহানুভূতি চায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেঙ্গু মহামারী রূপ নিয়েছে। কিন্তু পাশের দেশ ভারতের কলকাতায় ডেঙ্গু নির্মূলে মডেল তৈরি করেছে। তারা বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করছে। তা অনুসরণ করা যেতে পারে। মেয়রকে ফগার মেশিন কাঁধে নিয়ে ওষুধ ছিটাতে হবে না। অফিসে বসে তদারকি করুন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা যথাযথভাবে কাজ করছে কি না, মানুষের আলোচনা সমালোচনাকে গুরুত্ব দিন। সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, শহরে বিভিন্ন চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডে র ফলে নির্মাণাধীন প্রকল্পের ভিতরে এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভিতরে কোথাও পানি জমে আছে কিনা তা মনিটর করা প্রয়োজন। শ্যামল দত্ত বলেন, ডেঙ্গুর ওপর সারা বছর কাজ করতে হবে। যেখানে নগরায়ণ সেখানেই ডেঙ্গু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। দেওয়ান হানিফ মাহমুদ বলেন, মেয়রকে জনগণের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে হয়। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে দেরি হয়ে গেছে- এই কথাটাও তিনি যদি আন্তরিকতার সঙ্গে বলেন তাতেও নগরবাসী মানসিক শান্তি পাবে।  সবার বক্তব্য শোনার পর মেয়র বলেন, মশক নিধন কর্মী ও সুপারভাইজারদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির জন্য তাদের মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হবে। জিপিএস সিস্টেমের মাধ্যমে মশক নিধন কর্মীদের কাজের বিষয়ে তদারকি করা হবে। আধুনিক প্রযুক্তির ইউএলভি মেশিনে মশার ওষুধ ছড়ানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি আমরা। ওষুধ আমদানির লক্ষ্যে সব ধরনের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ডিএনসিসি পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করবে যারা বিভিন্ন ভবনে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এডিস মশার বংশ বিস্তারের উৎস আছে কিনা তা খতিয়ে দেখবেন। এ ছাড়া হাসপাতালগুলোতে নির্ধারিত মূল্যে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা হচ্ছে কি না এসব বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ সময় এবিনিউজটোয়েন্টিফোরের সম্পাদক সুভাষ সিংহ রায়, বাংলাদেশ পোস্ট সম্পাদক শরীফ শাহাবুদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান বার্তা সম্পাদক আনিসুর রহমান, আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর