বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

আয়-ব্যয় বেড়েছে আওয়ামী লীগের

তহবিলে ৩৭ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনী বছরে আয়-ব্যয় বেড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। ২০১৮ পঞ্জিকা বছরে আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। দলের তহবিলে বর্তমানে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। এদিকে এবার বিরোধী দল জাতীয় পার্টিরও আয়-ব্যয় বেড়েছে। গতকাল দল দুটি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে। তাদের জমা দেওয়া হিসাব থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল ইসি সচিব মো. আলমগীরের কাছে হিসাব জমা দেন। এ সময় প্রতিনিধিদলে ছিলেন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এস আশিকুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। হিসাব জমা শেষে ইসির মিডিয়া সেন্টারে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, এবার আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা এবং ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। দলের তহবিলে বর্তমানে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা অবশিষ্ট রয়েছে। ২০১৮ পঞ্জিকা বছরে আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা। এর মধ্যে বেশি আয় হয়েছে একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বিক্রি করে। এই ফরম বিক্রিতে আয় হয়েছে ১০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। দলটি গত বছর অনুদান পেয়েছে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৫ টাকা। আওয়ামী লীগের ২০১৮ সালে ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১০০ টাকা। দলের তহবিলে বর্তমানে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা অবশিষ্ট রয়েছে। গতকাল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আওয়ামী লীগের জমা দেওয়া বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের মোট আয় ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা। আয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- চাঁদা ১ কোটি ৪৫ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা, সদস্য সংগ্রহ/নবায়ন ফরম বিক্রি ২ কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৫২০ টাকা, মনোনয়নপত্র বিক্রি ১০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা ও অনুদান ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৫ টাকা। চাঁদার মধ্যে কার্যনির্বাহী সদস্যদের চাঁদা ৩৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, উপদেষ্টাদের চাঁদা ১০ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা, জাতীয় কমিটির সদস্যদের চাঁদা ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা, সংসদ সদস্যদের ৭৯ লাখ ২২ হাজার টাকা ও সংরক্ষিত আসনের এমপিদের চাঁদা ১৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা।

২০১৮ সালে দলটির ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। ২০১৭ সালের স্থিতি (নিট) ছিল ৩২ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার ৪৩৭ টাকা। ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এর আগে ২০১৭ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা, আর ব্যয় ছিল ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা। ২০১৬ সালের আওয়ামী লীগের আয় হয়েছিল ৪ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৯৭ টাকা, সেই বছর ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ১ লাখ ৮৪ হাজার ৭৯৯ টাকা এবং স্থিতি ছিল ১ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৯ টাকা। ২০১৫ সালে দলটির আয় হয়েছিল ৭ কোটি ১১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা, আর ব্যয় ছিল ৩ কোটি ৭২ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৯ টাকা। অর্থাৎ সে সময় দলটি প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত দেখিয়েছিল। ২০১৪ সালে দলটি আয় দেখিয়েছে ৯ কোটি ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪৩ টাকা, আর ব্যয় দেখিয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা। ওই বছর প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত ছিল। ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ আয় দেখিয়েছিল ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা, আর ব্যয় দেখিয়েছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এতে প্রায় ৬ কোটি টাকা দলটির উদ্বৃত্ত ছিল।

আয় বেড়েছে জাপার : ২০১৮-২০১৯ সালের জাতীয় পার্টি তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাববিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে। গতকাল পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন নির্বাচন কমিশনে আয়-ব্যয়ের হিসাববিবরণী জমা দেন। ২০১৮-২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির আয় হয়েছে ১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৬ হাজার এবং ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এর আগে ২০১৭ সালে জাপার আয় ছিল ১ কোটি ৮ লাখ ৫৫ হাজার ২৪০ টাকা। ওই সময় দলটির ব্যয় ছিল ১ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ টাকা। তখন ১ লাখ টাকারও বেশি উদ্বৃত্ত ছিল। ২০১৬ সালে জাপার আয় ছিল ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা। এর বিপরীতে ব্যয় হয় ১ কোটি ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৩ টাকা। ওই বছর ব্যয় বেশি হয়েছে ৩২ লাখ ২২ হাজার ৮০৩ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর