শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি প্যানেল নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সর্বোচ্চ ভোট পাওয়ার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্যানেলে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের নাম ১ নম্বরে না থাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বইছে সমালোচনার ঝড়। নীল দলের (আওয়ামীপন্থি) এ প্যানেল নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে খোদ নীল দলের শিক্ষকদের মধ্যেই। তারা বলছেন, ভোটের সিদ্ধান্ত সিনেটে গিয়ে পাল্টে গেছে। অধিকাংশ শিক্ষকের মতকে অগ্রাহ্য করে প্যানেল তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে অনেক সিনেট সদস্য বলছেন, উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে তারা কোনো মতামত দিতে পারেননি। জানা যায়, আগামী চার বছরের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে বুধবার সিনেট অধিবেশনে তিনজনের প্যানেল চূড়ান্ত হয়। সেখানে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের নাম ১ নম্বরে, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের নাম ২ নম্বরে এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামালের নাম ৩ নম্বরে স্থান পায়। এ প্যানেল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি একজনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেবেন। অভিযোগ উঠেছে, দলীয় ফোরামে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া মুহাম্মদ সামাদের নাম তালিকায় সবার আগে থাকার কথা থাকলেও নিয়ম ভঙ্গ করে বর্তমান উপাচার্য আখতারুজ্জামানের নাম প্রথমে দেওয়া হয়েছে। সিনেট সূত্রে জানা গেছে, নীল দলের প্যানেল ঠিক করতে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন মিলনায়তনে সংগঠনের শিক্ষক প্রতিনিধি ও রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নীল দলের ৫৩ জন সিনেট সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে মোট পাঁচজন শিক্ষকের মধ্য থেকে উপস্থিতদের ভোটে তিনজনের প্যানেল চূড়ান্ত করা হয়। এতে সর্বোচ্চ ৪২ ভোট পান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ। অন্যদিকে বর্তমান উপাচার্য আখতারুজ্জামান ৩৬ ভোট এবং মাকসুদ কামালের পান ৩০ ভোট। তাৎক্ষণিকভাবে সবাধিক ভোট পাওয়া মুহাম্মদ সামাদের নাম এক নম্বরে রেখে প্যানেলের ক্রম ঠিক করার সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান সিনেট সদস্য ড. হুমায়ুন কবির। পরদিন, সাদা দল নির্বাচন বর্জন করলে অধিবেশনে নীল দলের পক্ষে প্যানেল সদস্যদের নাম প্রস্তাব করা হয়। আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের নাম এক নম্বর এবং অধ্যাপক সামাদের নাম দুই নম্বরে রেখে ‘জোরপূর্বক’ প্যানেল মনোনয়ন দেওয়া হয়। তড়িঘড়ি করে প্রস্তাবটি পাস করা হয়। সিনেটে এ প্রস্তাব তোলা হলে নীল দলের সাবেক আহ্বায়ক এবং বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ এর প্রতিবাদ করেন। সিনেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করা উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান তা পাশ কাটিয়ে জাতীয় সংগীত বাজিয়ে অধিবেশন শেষ করে দেন বলে জানান কয়েকজন সিনেট সদস্য। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ১০৫ ভোটারের সবার অনুপস্থিতিতে ভিসি প্যানেল ঠিক করায় একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে তখনকার ভিসি প্যানেল অবৈধ ঘোষণা করা হলে ড. আখতারুজ্জামানকে সাময়িক উপাচার্যের দায়িত্ব দেন আচার্য। সেই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব বৈধভাবে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের নির্দেশ দেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর