শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঠাকুরগাঁওয়ে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১০

প্রতিদিন ডেস্ক

দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল মোট ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে দুই বাসের সংঘর্ষে দশজন নিহত হয়েছেন। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে গতকাল মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মিনিবাস চালকসহ আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৪ জন, তাদের রংপুর মেডেকেল কলেজ ও ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর সড়ক পথে যানচলাচল ৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকে। জানা গেছে, সকাল ৮টার দিকে ঠাকুরগাঁও-ঢাকা মহাসড়কের বড়খোচাবাড়ি বলাকা উদ্যান এলাকায় ঢাকা থেকে আসা ডিপজল এন্টার প্রাইজ ও দিনাজপুরগামী যাত্রীবাহী নিশাত এন্টার প্রাইজের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মিনিবাসের চালক চায়নাসহ পাঁচজন,  ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজন ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজন মারা যান। অন্য নিহতরা হলেন ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বিপুল চন্দ্র (৩৫), আবদুর রহমান ((৪৫), মোস্তফা (৪৫), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০), বীরগঞ্জ উপজেলার গলিরামের মঙ্গলী রানী (৭০), একই এলাকার মনেস্বরের স্ত্রী জবা (৩৫), আবদুল মজিদ (৩৬)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি মোটরসাইকেল ও শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটিকে বাঁচাতে গিয়ে নৈশকোচ ও মিনিবাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পরে হতাহতদের দেখতে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে যান জেলা প্রশাসক কেএম কামরুজ্জামান সেলিম, সিভিল সার্জন আনোয়ারুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা আহতদের সু-চিকিৎসার সার্বিক সহায়তার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত পরিবার প্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ধামরাই (ঢাকা) : ধামরাইয়ে অজ্ঞাত গাড়ির চাপায় এক কলেজছাত্রসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের বারবাড়িয়া ইনসেপ্টা ওষুধ কারখানার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের বালিথা উত্তরপাড়া গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে মানিকগঞ্জ খান বাহাদুর কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্র সেলিম হোসেন (১৮) ও একই গ্রামের মৃত আবদুুল খালেক বেপারীর ছেলে মাসুদ রানা (২৮)। একই মোটরসাইকেলের অপর আরোহী শাওন গুরুতর আহত হন। তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, সেলিম, মাসুদ রানা ও শাওন মোটরসাইকেলে করে মানিকগঞ্জ থেকে ধামরাইয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে ইনসেপ্টা ওষুধ কারখানার সামনে অজ্ঞাত গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই সেলিম হোসেন নিহত হন এবং সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ১২টার দিকে মাসুদ রানা মারা যান। চট্টগ্রাম : পতেঙ্গা এলাকায় একটি বেসরকারি কনটেইনার ডিপোতে লরির চাপায় এক কর্মীর প্রাণ গেছে। গতকাল সকালে পতেঙ্গার সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড ডিপোতে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে পতেঙ্গা থানার এসআই আবু শাহেদ রানা জানান। নিহত রাসেল (৩৫) নগরীর মধ্যম হালিশহর এলাকার মোজাফফর রহমানের ছেলে। তিনি ওই কনটেইনার ডিপোর কর্মচারী ছিলেন। এসআই রানা বলেন, রাসেল একটি লরির সামনে দাঁড়িয়ে কাগজপত্র দেখছিলেন। আরেকটি লরি ব্যাক গিয়ারে পেছন দিকে যাওয়ার সময় তাকে চাপা দেয়। রাসেলকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নবাবগঞ্জ (ঢাকা) : নবাবগঞ্জের দক্ষিণ পূর্ব শোল্লা এলাকায় গতকাল ভোরে ঢাকা মেট্রো-চ ১১-৬১০১ নম্বরের একটি এক্স নোয়া মডেল ২০০৩ মাইক্রোবাস গতি হারিয়ে খালে পড়ে গেলে মহাদেব রায় (৪৫) নামে এক পথচারী নিহত ও নবদ্বীপ তালুকদার (৬৫) মারাত্মকভাবে আহত হন। গাড়িতে থাকা ৪ আরোহী প্রাণে বেঁচে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোর ৫টায় ঢাকার মিরপুর থেকে দোহারের মৈনটঘাট মিনি কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হওয়া একটি মাইক্রোবাস হঠাৎ দক্ষিণ পূর্ব শোল্লা সেতু সংলগ্ন সড়কে গতি হারিয়ে ফেলে এই দুর্ঘটনা ঘটায়। নিহতের স্বজন রণজীত কুমার রায় বলেন, মুমূর্ষু অবস্থায় মহাদেব ও নবদ্বীপকে  উদ্ধার করে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উপস্থিত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর কিছু সময় অতিবাহিত হলে মহাদেব রায়ের মৃত্যু হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান তুহিনুর রহমান তুহিন বলেন, চালকের অসাবধানতার কারণে এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। নবাবগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মুহাম্মদ গোলাম নবী শেখ বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। চালক পলাতক রয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে এবং গাড়িতে থাকা ৪ আরোহীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর