শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে

শিমুল মাহমুদ

এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে

স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন

নগর বিশেষজ্ঞ ও স্থপতি মোবাশে^র হোসেন বলেছেন, সমন্বিত উদ্যোগে এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে চাইলে, এডিস মশার বিস্তার সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসতে চাইলে সমন্বিতভাবে কাজ করার বিকল্প নেই। সরকারি সংস্থা, সিটি করপোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, পুলিশ, বিডিআরসহ সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। কিন্তু আমরা শুরু থেকেই দেখছি দুই মেয়রের কথায়, কাজে অনেক গরমিল। সমন্বয়ের কাজটি কেউ করছেন না। গতকাল সন্ধ্যায় এডিস মশার বিস্তার এবং সমন্বয়হীন সরকারি কর্মকা  নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থপতি মোবাশে^র হোসেন বলেন, এডিস মশা মারতে হলে আমাদের সমন্বিতভাবে যুদ্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই অনুসরণ করতে পারি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতাকে। তারা যে বাড়িতে এডিস মশার হদিস পাওয়া যায় তার আশেপাশে সর্বত্র মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করে। তিনি বলেন, আসলে অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে এডিস মশার দ্রুত বিস্তার ঘটছে। এ জন্য সমন্বিতভাবে এর বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে চেষ্টা চালাতে হবে। রাজধানীর ৯৯ শতাংশ হাইরাইজ ভবনের নিচে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। সেখানকার স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটছে। নগর ভবনের ছাদে গেলেও দেখা যাবে সেটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। সেই ছাদের দায়িত্বে কেউ নেই। প্রত্যেক সরকারি অফিস, ভবনের ছাদ অরক্ষিত। সেখানে পানি জমে। সেই স্বচ্ছ পানি পরিষ্কার করার কেউ নেই। বড় সাহেবদের টেবিল পরিষ্কার করার দায়িত্বে লোক আছে কিন্তু ভবনের ছাদ পরিষ্কার করার দায়িত্বে কেউ নেই। এই অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে। তিনি বলেন, যে মশা চেনে না তার কাছে বিড়াল আর বাঘ একই কথা। তারা বিড়াল মেরে হয়রান অথচ বাঘ মারার কাজটি বাকি থেকে যাচ্ছে। এ জন্য সিটি করপোরেশনগুলোতে কীট বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। যারা মশা চিনবেন। কাকে মারতে হবে আর কাকে উপেক্ষা করলেও চলবে সেটি বুঝবেন। নগর বিশেষজ্ঞ মোবাশে^র হোসেন বলেন, এডিস মশা সাধারণত রাস্তায় থাকে না। নোংরা, ময়লা ড্রেনে থাকে না। কিংবা সর্বত্র উড়ে বেড়ায় না। অথচ সিটি করপোরেশন লাখ লাখ টাকা খরচ করে রাস্তায়, ড্রেনে ফগার মেশিন দিয়ে উড়ন্ত মশা মারছে। অথচ রাস্তায়, ড্রেনে এডিস মশা বাড়ছে না। এমনকি বস্তিতেও এডিস মশা নেই। এ পর্যন্ত যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে বস্তিবাসীর সংখ্যা অনেক কম। তিনি বলেন, এডিস মশার চরিত্র সব জায়গায় এক। তবে সব মশা ডেঙ্গুর বাহক নয়। এডিস মশা ডেঙ্গুর ভাইরাস বহন করে। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেক নাগরিককে তার বাড়িঘর, অফিসে মশার লার্ভার উৎপত্তিস্থল বিনষ্ট করতে হবে। লার্ভা যেখানে জন্মে সেই জায়গাটা সুরক্ষিত রাখতে হবে। এডিস মশাকে বলা হচ্ছে ‘গৃহপালিত মশা।’ বস্তিবাসীর মধ্যে ডেঙ্গুর বিস্তার অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। কারণ, বস্তির চারপাশটা অপেক্ষাকৃত নোংরা, অপরিচ্ছন্ন থাকে। এডিস মশার উৎপত্তিস্থল হচ্ছে বড় বড় দালানকোঠা। সেখানকার জমে থাকা স্বচ্ছ পানির উৎসে। সেদিকে আমাদের নজর দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর