নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি সারা দেশে মহামারী আকার ধারণ করেছে, দেশের সব জেলা আজ ডেঙ্গু কবলিত। এমন পরিস্থিতিতেও মশা মারতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ লাগে। এটি খুবই হাস্যকর। দায়িত্বশীলতার চূড়ান্ত অভাবের কারণেই আজ দেশের এই চিত্র।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বিরাজিত নৈরাজ্যিক পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা ও সারা দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে নাগরিক ঐক্য এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, দলের সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ কাউসার, মোমিনুল হক, ডা. জাহিদ-উর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও ঢাকা সিটির দুই মেয়র মশা মারার নাটক করছেন। এখন পর্যন্ত তারা মশা মারার কার্যকর ওষুধ আমদানি করতে পারেননি। এদের হাতে দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না বলেন, মশা নিধনে বর্তমানের ওষুধটি কার্যকর নয়। গত দুই-তিন বছর এমন রিপোর্ট দেখা গেছে যে, শুধুমাত্র পছন্দের কোম্পানিকে অন্যায়ভাবে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য একই ওষুধ কেনা হয়েছে। মশা মারার কার্যকর ওষুধ কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশ দিতে হয়েছে। এ রকম একটা বিষয়ে যদি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের প্রয়োজন হয়, তাহলে ঢাকার দুই সিটি মেয়র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং একইসঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ডেঙ্গুর সিজন এখনো তিন মাস বাকি। আগামী সেপ্টেম্বরে এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠার কথা। আমাদের দেশে যখন ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তার, তখন পশ্চিমবঙ্গে প্রকোপ কমে গিয়ে সামান্য পর্যায়ে আছে। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ সরকার থাকলে, এর ফল কী হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ তা দেখিয়েছে। আর মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে, তার ফল কী হয়, তার প্রমাণ বাংলাদেশ। ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্যাম্প স্থাপন ও প্রতিদিন মশার ওষুধ ছিটানোর দাবি জানান মান্না। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ঢাকার দুই সিটির দুই মেয়র কী বাগাড়ম্বর করছেন। অনর্থক বিরোধী দলের রাজনীতিকে দোষারোপ করছেন। তবে একথাও সত্য যে, বিরোধী দলের রাজনীতি আজ অনৈক্যের কানা গলিতে আর আপসকামিতার চোরাবালিতে আটকে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে ‘ভোট ডাকাতির জাতীয় সংসদ’ বাতিলের দাবি জানিয়ে মান্না বলেন, অবিলম্বে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, মশা মারার ওষুধ কার্যকর নেই। নির্বাহী বিভাগ গড়িমসি করছে, তাই নতুন ওষুধ আনার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা মহামারী আকার ধারণ করেছে। এর পেছনেও সরকারের দায়িত্বহীনতাই দায়ী। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, মানুষকে এখন প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারা হচ্ছে। সরকারের প্রশ্রয়ে পুলিশের গাফিলতির জন্যই এমনটি হচ্ছে। পুলিশ বাহিনী দিয়ে বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েও সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। তিনি বলেন, বিরোধী দলের ওপর পুলিশ বাহিনী দিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।
