রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

চরম দায়িত্বহীনতা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

-খন্দকার মোশাররফ হোসেন

শামীম আহমেদ

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী চরম উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রথমত দেশের এই নাজুক পরিস্থিতির সময় তিনি পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে গিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, ডেঙ্গুতে কতজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে সেই হিসাব সাংবাদিকদের উনি দিতে পারেননি। এতেই প্রমাণ হয় উনি কতটা দায়িত্বহীন। উনার (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) তো পদত্যাগ করা উচিত। আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ডেঙ্গু এমন মহামারি আকার ধারণ করেনি। তারপরও প্রতি ঘণ্টায় কতজন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, কতজন ছাড়া পাচ্ছে- সব হিসাব রাখতাম। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মুঠোফোনে তিনি এসব কথা বলেন। ডেঙ্গুর ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে দায়ী করে ড. মোশাররফ বলেন, ডেঙ্গু নতুন নয়। আমি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালীনও ডেঙ্গু ছিল। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সিটি করপোরেশন প্রতি মার্চ-এপ্রিলেই বৈঠক করে সমন্বিতভাবে করণীয় ঠিক করতাম। মশার বৃদ্ধি দমনে আগেভাগেই ব্যবস্থা নিতাম। ফলে ডেঙ্গু মহামারি আকার নিতে পারেনি। এখন জুলাই পার হয়ে আগস্ট চলছে। কোনো ব্যবস্থা নেই। আমাদের সহযোগিতায় মশা দমনে প্রথম কাজ সিটি করপোরেশনই করেছিল। এখন মশা না মেরে সিটি করপোরেশন এই পরিস্থিতিকে বলছে গুজব। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার পর এখন তারা স্বীকার করছে। দীর্ঘদিন ধরে দুই নম্বর ওষুধ আনছে। আইসিডিডিআরবি এ ওষুধের ব্যাপারে সতর্ক করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। এখন হাই কোর্ট পর্যন্ত গেছে মশার ওষুধ। দুর্নীতি আর জনগণের প্রতি দায়িত্বহীনতার কারণে আজ এই পরিস্থিতি। সাবেক এ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা যে কাজগুলো করেছিলাম সেটার ধারাবাহিকতা থাকলে ডেঙ্গু আজ এমন ভয়াবহ রূপ নিতে পারত না। এখন যখন সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া দরকার তখন লোক দেখানো পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাচ্ছেন সরকারের কেউ কেউ। এক মন্ত্রী লোকজন নিয়ে রাস্তা ঝাড়ু দিলেন। গণমাধ্যমে সেই ছবি ছাপা হলো। অথচ এডিস মশা জন্মে পরিষ্কার পানিতে। রাস্তায় এডিস মশা হয় না, আর ঝাড়ু দিয়ে তা দূর করা যায় না- এটা সবাই জানে। এটা এক ধরনের তামাশা। তিনি আরও বলেন, এখনো আন্তরিক হলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। প্রথমে প্রতিরোধ করতে হবে। অর্থাৎ কার্যকর ওষুধ দিয়ে মশা মারতে হবে। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই মুহূর্তে সরকারের উচিত দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, কিøনিকে বিনা খরচে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ফ্রি কিট সরবরাহ ও প্রয়োজনে ভর্তুকি দেওয়া। সব ডাক্তারকে আহ্বান জানিয়ে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজে লাগানো।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর