সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে নিজের আয়ে চলতে হবে : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে নিজের আয়ে চলতে হবে : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘প্রতি অর্থবছরই মূলধন ঘাটতি পূরণের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে বরাদ্দ (রিফাইন্যান্সিং) দিয়ে থাকে সরকার। তবে সে সুযোগ আর রাখা হবে না। এখন থেকে আর রিফাইন্যান্সিং নয়। এটা এখন থেকে অতীত। আর কোনো দিন রিফাইন্যান্সিং হবে না। তারা নিজেরা লাভ করে অর্থ আয় করবে। এ দেশের মানুষকে দেখাশোনা করেই তাদের বেতন নিতে হবে।’ গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে আলোচনা শেষে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘সাত দিনের মধ্যে সোনালী, রূপালী, জনতা ও অগ্রণী এই চারটি ব্যাংক তারা কীভাবে চালাবেন এর কর্মপরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। ৮ সেপ্টেম্বর সেই কর্মপরিকল্পনা নিয়ে পর্যালোচনা সভা করা হবে। এই ব্যাংকগুলোর টপ ম্যানেজমেন্টে যারা আছেন বা যাদের নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা অত্যন্ত পারদর্শী এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরীক্ষিত। তাই তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে তাদের কাছ থেকে আমাদের ব্যাংকগুলো নিয়ে ভালো কিছু প্রত্যাশা করছি। যদিও সংখ্যা চার কিন্তু ব্যাংকিং খাতে তাদের অবস্থান অনেক বড়। আমানতের খাতে তাদের নিয়ন্ত্রণ ২৫ শতাংশ। অনেকেই তারল্য সংকট নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু আমাদের তারল্যের পরিমাণ ৯২ হাজার কোটি টাকারও বেশি, যা অনেক কমে গিয়েছিল। এই চারটি ব্যাংক চাইলে দেশের পুরো ব্যাংকিং খাতকে বেগবান করতে পারে।’ অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আজ কিছু পত্রপত্রিকায় দেখলাম অনেকেই শঙ্কিত যে আগামীতে আমাদের রপ্তানি কমে যাবে, যার ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতির ধারা ব্যাহত হতে পারে। কিন্তু এটি একটি অমূলক ধারণা। কেননা উদাহরণ হিসেবে বলা চলে, ১৯৯৭ সালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময়, ২০০৭-২০০৮ সালের মহামন্দার সময়ও আমাদের সমস্যা হয়নি। কারণ আমরা যে স্তরের রপ্তানিকারক, সাধারণত এই স্তর অর্থনৈতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। এ ছাড়া আমাদের পুঁজিবাজারেও বাইরের কোনো পুঁজি নেই। তাই আমাদের জন্য এ ধরনের আশঙ্কা অযৌক্তিক। আজও আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে আইএমএফ এই চলতি অর্থবছরের যে উচ্চ প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ করেছে সেটি বেশ কিছু মিডিয়ায় এসেছে। আমরা এত দিন বিনিয়োগ করেছি অবকাঠামো খাতে। কিন্তু এ বিনিয়োগ থেকে এখনো ফল পেতে শুরু করিনি। এখন এসব বিনিয়োগ থেকে ফল পেতে শুরু করব। তাই আমাদের প্রবৃদ্ধি আরও অনেক বেশি হবে। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।’ খেলাপি ঋণ বেড়েছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘খেলাপি ঋণ বাড়েনি। তবে এক্সিট প্ল্যান বাস্তবায়িত না হওয়ায় খেলাপি ঋণ বেশি দেখাচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলেই খেলাপি ঋণ অনেক কমে আসবে। গত মার্চ থেকে জুন প্রান্তিকে নতুন করে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়েনি। কেবল খেলাপি ঋণের ওপর সুদের পরিমাণ বেড়েছে। আর গত মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বিবেচনা করলে দেখা যায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমেছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত সার্কুলারের ওপর উচ্চ আদালতে রিট হওয়ায় ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টের সুযোগটি অনেকেই নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই খেলাপি ঋণের পরিমাণ আশানুরূপ কমেনি। আশা করা যায় উচ্চ আদালতে বিষয়টি পুরোপুরি সুরাহা হয়ে গেলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও কমবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর