মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের উসকানি দিচ্ছে নানা গোষ্ঠী

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গাদের উসকানি দিচ্ছে নানা গোষ্ঠী

লে. জে. (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর

নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে. জে. (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর বলেছেন, আঞ্চলিক ও বিশ্বের নানা স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের উসকানি দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এ কারণে ক্রমেই তারা অসহিষ্ণুু হয়ে উঠছে। সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরছে। নাগরিকত্ব না পেলে ফিরে যাবে না বলে হুমকি দিচ্ছে। গতকাল রাতে নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের জনতন্ত্র গণতন্ত্র অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। যে রোহিঙ্গারা নিজের দেশে অধিকার আদায়ে সংঘবদ্ধ হতে পারেনি, তারা ভিনদেশে কীভাবে এতটা সংগঠিত হচ্ছে- সঞ্চালকের এমন প্রশ্নে ফজলে আকবর বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা সেনাবাহিনীর কঠোর তত্ত্বাবধানে ছিল। সে দেশের সরকার তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক কারণে শরণার্থী হিসেবে তাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন শরণার্থীরা ক্যাম্পে থাকে তখন তারা অর্থনৈতিক, সামাজিক নানাভাবে অবহেলিত থাকে বলে মনে করে। একসঙ্গে অনেক মানুষ অবস্থান করায় সংঘবদ্ধ হয়ে নানা দাবি-দাওয়া আদায় করতে চায়। এ ছাড়া বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী তাদের ব্যবহার করতে চায়। আমার মনে হয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে রোহিঙ্গাদের প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরছে। এ ছাড়া পৃথিবীর সব শরণার্থী ক্যাম্পে উগ্রপন্থি ও জঙ্গিগোষ্ঠী তৎপর থাকে। তারা শরণার্থীদের নানাভাবে ব্যবহার করতে চায়। এজন্য বিভিন্নভাবে অর্থায়ন করে। প্ররোচনা দেয়। রোহিঙ্গাদেরও এমন কোনো গোষ্ঠী প্ররোচনা দিচ্ছে বলে তাদের কর্মকা- দেখে মনে হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩০০ এনজিও কাজ করছে। ওই ধরনের কার্যক্রমে কোনো এনজিও লিপ্ত আছে কিনা খুঁজে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, মানবিক কারণে আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম। আশা করেছিলাম, বিশ্ব সমাজ এগিয়ে আসবে। এ সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু হয়নি। প্রধানমন্ত্রী যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মানবিক কারণে। অথচ শান্তিতে নোবেল পাওয়া মিয়ানমারে নেত্রী অং সান সু চি সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেননি। কূটনৈতিকভাবে আমাদেরকে এ সমস্যা সমাধানে আরও তৎপর হতে হবে। যদিও চেষ্টা হয়েছে অনেক। তারপরও এটা আরও বাড়াতে হবে। ভারত ও চীন এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে। কীভাবে তাদেরকে সঙ্গে আনা যায় তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসে ঠিক করতে হবে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুরুতেই অনুমান করছিল এমন সমস্যা হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে তারা সদা তৎপর ছিল। এত বড় একটা কমিউনিটিকে পাহারা দিয়ে রাখা সত্যিই কঠিন। তারপরও গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটেনি। বাংলাদেশে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এবং নিরাপত্তা বাহিনীগুলো অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করেছে। রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে দেশে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই দাবি করে ফজলে আকবর বলেন, আমরা অনেক বড় বড় সন্ত্রাসবাদ ভালোভাবে মোকাবিলা করেছি। এটা মোকাবিলার শক্তি ও সাহস আমাদের আছে। তবে ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে যে সমস্যাগুলো হচ্ছে সেগুলোর গোড়ায় গিয়ে সমাধান করতে হবে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নিউজ টোয়েন্টিফোরের হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সামিয়া রহমান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর