সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

শিল্পাঞ্চলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণের আহ্বান

ঋণের সুদ সিঙ্গেল ডিজিট নিশ্চিতে কাজ করছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিল্পাঞ্চলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সংরক্ষণের আহ্বান

গতকাল রাজধানীতে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাসস

নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি মনোযোগী হওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করব, যে শিল্প বা শিল্পাঞ্চল আপনারা গড়ে তুলবেন বা শিল্পোন্নয়ন করবেন পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রতি আপনাদের গুরুত্ব দিতে হবে। গতকাল সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি-২০১৬-১৭ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি। অনুষ্ঠানে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রপ্তানিতে অবদানের জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির হাতে ২৯টি স্বর্ণ, ২১টি রৌপ্য এবং ১৬টি ব্রোঞ্জ ট্রফি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি শিল্প এলাকায় একটি করে জলাধার রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘যেন বৃষ্টির পানি সেখানে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়। যতগুলো স্থাপনা হবে সেখানকার বৃষ্টির পানি এখানে সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। যাতে অগ্নিকা সহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এই পানি ব্যবহার করা যায়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসায়ীরাই ব্যবসা করবেন, তাদের কাজে আমরা সহযোগিতা করব।’ পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি সম্প্রসারণে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যাংকে ঋণ নিতে গেলে অনেক উচ্চহারে সুদ দিয়ে ঋণ নিতে হয়, ডাবল ডিজিটে। ইতিমধ্যে আমরা নির্দেশ দিয়েছি এটা সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে। কিছু কিছু ব্যাংক মেনেছে। কিছু কিছু ব্যাংক মানেনি এখনো। তবে তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। তাদের যা যা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া তাও আমরা করে দিচ্ছি।’ ব্যবসা-বাণিজ্যের চালিকাশক্তি বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট সমাধানেও সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন দেশের ৯৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রামপাল, মাতারবাড়ী, পায়রা ও মহেশখালীতে মেগা বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ চলছে।’ সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প স্থাপনে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যার সমাধান করেছি এবং এলএনজি আমদানি শুরু করেছি।’ ফেøাটিং এলএনজি টার্মিনাল এবং ল্যান্ড বেজ টার্মিনাল করার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান, উৎপাদন এবং আমদানি করে গ্যাসের সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন নতুন পণ্য সংযোজন ও বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন পণ্য, নতুন দেশ। এই নতুন দেশে নতুন পণ্য খুঁজে যাতে বের করতে পারি, রপ্তানি করতে পারি, বাজারটা যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।’

পুরস্কার বিতরণ : দেশের রপ্তানি খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অনুষ্ঠানে ২৮টি ক্যাটাগরিতে ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের মাঝে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি ২০১৬-১৭ এর ২৯টি স্বর্ণ, ২১টি রৌপ্য এবং ১৬টি ব্রোঞ্জ ট্রফি প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘জাবের অ্যান্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড’ টানা ষষ্ঠবারের মতো শ্রেষ্ঠ রপ্তানিকারক হিসেবে ২০১৬-১৭ সালের রপ্তানি স্বর্ণ ট্রফি জয় করে। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়ের জন্য আরও একটি স্বর্ণ ক্রেস্ট পায়। অনুষ্ঠানে দেশের রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের ওপর একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম এবং এফবিসিসিআইর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বেগম ফাতিমা ইয়ামিন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন।

সর্বশেষ খবর