শিরোনাম
বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
রাজনীতির হালচাল

নেতৃত্ব সংকট থেকে মুক্তির পথ খুঁজছে বিএনপি

শফিউল আলম দোলন

নেতৃত্ব সংকট থেকে মুক্তির পথ খুঁজছে বিএনপি

বিরোধী দল বিএনপি এখন দলের নেতৃত্ব সংকট থেকে মুক্তির পথ খুঁজছে। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া টানা ১৮ মাস ধরে কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একাধিক মামলায় দি ত ও বিদেশে নির্বাসিত। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তাঁর কোনো বক্তব্য দেশের কোনো মিডিয়ায় প্রচার করা সম্ভব হচ্ছে না। লন্ডন থেকে টেলিফোন-স্কাইপিতে নেতৃত্ব দিলেও ততটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছেন না তিনি। আবার বেগম খালেদা জিয়া খুব শিগগিরই মুক্তি পাবেন বলে মনে করেন না দলের নেতা-কর্মীরা। এ অবস্থায় চরম নেতৃত্ব সংকটে রয়েছে বিএনপি। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে নানারকম চিন্তাভাবনা করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। জানা গেছে, পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে ঐক্যফ্রন্ট গঠন, জাতীয় সংসদে যোগদানসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ ও কৌশল নিলেও কোনো কিছুই কাজে লাগছে না। তবে টানা ১৩ বছরের নাজুক অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নেতারা। এর মধ্যে দলীয় প্রধানের কারামুক্তিকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। দলের বেশির ভাগ নেতাই মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার মাধ্যমেই ঘুরে দাঁড়াবে বিএনপি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করেন, বিএনপিতে এখনো ৭৪ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়াই সবচেয়ে সাহসী নেতা। কাজেই দলের সংকট উত্তরণের ক্ষেত্রে তাঁর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু তাঁর মুক্তি দীর্ঘায়িত হলে বিকল্প নেতা হিসেবে পুত্রবধূ ডা. জোবায়দা রহমানকেই ভাবতে শুরু করেছেন অনেকে। তারা মনে করেন, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পর জিয়া পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একমাত্র ডা. জোবায়দা রহমানই এখন বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য। তিনি দায়িত্ব নিলে স্বল্পসময়েই চাঙ্গা হয়ে উঠবে বিএনপি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন প্রবীণ নেতা দলের ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দলের বর্তমান অবস্থায় একমাত্র ডা. জোবায়দা রহমানকেই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। কারণ, বেগম খালেদা জিয়া আর তারেক রহমানের পর সারা দেশের দলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের কাছে ডা. জোবায়দারই গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। অনদিকে, বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানেরও আপাতত দেশে ফিরে আসা সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় বিকল্প নেতা হিসেবে ডা. জোবায়দা রহমানই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। যেমন জিয়াউর রহমানের অনুপস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়া দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তা ছাড়া জোবায়দা রহমানের ভাবমূর্তি দলে ভালো বলে মনে করে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। তবে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মনে করেন, দলের ভিতরে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে তারা যে গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু করেছেন, বিশেষ করে বিভিন্ন স্তরের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে, এতে নেতৃত্ব সংকট শিগগিরই কেটে যাবে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি এখন কঠিন সময় পার করছে ঠিকই। কিন্তু এটা বেশি দিন থাকবে না। বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সব গণতন্ত্রকামী দল ও মানুষকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারলে জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মতে, বিএনপিতে নেতৃত্বের সংকট এখন চরমে। জনগণের আস্থা অর্জনে বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন। এ নেতৃত্বকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হতে হবে। একই সঙ্গে শ্যাডো ক্যাবিনেট প্রক্রিয়া অনুসরণ করা দরকার। তারা ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে কারা দেশ পরিচালনা করবেন, তা স্পষ্ট করা প্রয়োজন। দলীয় প্রধানের মুক্তি দাবির পাশাপাশি সরকারের জনবিরোধী কর্মকান্ডে রও সমালোচনা করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর