জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পকে ঘিরে অশান্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ। প্রকল্পের শুরুতেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার অর্থ কেলেঙ্কারি ও সহস্রাধিক গাছ কাটার ঘটনায় অস্থিরতা বিরাজ করছে ক্যাম্পাস জুড়ে। গতকাল দিনব্যাপী তিন দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ ছাড়া উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ১৯ জন সিনেট সদস্য। ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে অবরোধকারীদের তিন দফা দাবি হলো- উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে ২ কোটি টাকা দেওয়ার অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল ঘিরে নির্মিতব্য তিনটি দশ তলা আবাসিক হলের বিকল্প স্থান নির্বাচন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন। দিনব্যাপী অবরোধের ফলে বন্ধ ছিল সব প্রশাসনিক কার্যক্রম। আজ এবং আগামীকাল পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন আন্দোলনকারীরা। এদিকে উন্নয়ন প্রকল্পের অস্বচ্ছতা, অনিয়ম, পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা তৈরি এবং উপাচার্য ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট থেকে নির্বাচিত ১৯ জন সিনেটর। তারা বলেন, এই মেগা প্রকল্প সম্পর্কে সিন্ডিকেট ও সিনেট সভায় উপস্থাপন করা হয়নি এবং তাদের কোনো মতামত গ্রহণ করা হয়নি। মাস্টারপ্ল্যান করার সময় যথাযথ ধাপ অনুসরণ করা হয়নি এবং অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। তারা অভিযোগ করে বলেন, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাদের কারও এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের যোগ্যতা নেই। উপাচার্য তার ব্যক্তিগত সচিবসহ অনুগত ও অদক্ষ ব্যক্তিদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে রেখেছেন। এ ছাড়া উপাচার্য তার অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আর্কেটিক্ট ফার্ম নির্বাচন করেছেন। এদিকে গতকাল দুপুর আড়াইটায় উপাচার্যপন্থি শিক্ষকদের এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।