আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টির টানাপড়েন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এখানে আওয়ামী লীগের কিছুই করার নেই। জাতীয় পার্টি বর্তমানে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল। এরশাদ-উত্তর জাতীয় পার্টিতে যে টানাপড়েন চলছে, এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। এটা একান্তই জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার তারাই সমাধান করবে। কে তাদের চেয়ারম্যান হবে? কে তাদের বিরোধীদলীয় নেতা হবে। এটা তারাই ঠিক করবে। আওয়ামী লীগ এটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না। আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। গতকাল রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের আগাম কর্মসূচি হিসেবে যুবলীগ দক্ষিণের মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনকে ‘জনগণের ক্ষমতায়ন দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী। যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ। আলোচনা সভায় রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আতাউর রহমান আতা, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, আবদুস সাত্তার মাসুদ প্রমুখ।  ওবায়দুল কাদের বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিরোধী দলের আসনে যারা বসবে, স্পিকার নিয়ম মতোই তাদের স্বীকৃতি দেবেন। এখানে কারও প্রতিই শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের কোনো পক্ষপাত নেই। রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রংপুর-৩ আসনে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি চলছে। আমাদের অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। এ পর্যন্ত ১৬ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। শনিবার (আজ) প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হবে। তবে বঙ্গবন্ধু পরিবারে কোনো প্রার্থী নেই। আমরা দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্য থেকেই নৌকার মনোনয়ন দেব। বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যতই চেঁচামেচি করুক, বিষোদগার করুক, এটাই বাস্তব- উন্নয়ন অর্জনে শেখ হাসিনা আজকে অপ্রতিরোধ্য। বর্তমান বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি বিরোধী রাজনীতিকদের সংকটে ফেলে দিয়েছে। বিএনপি নেতিবাচক রাজনীতি করে। তাই তাদের এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উপায় নেই। এ সংকটের কারণে বিএনপি আজ পথহারা পথিকের মতো দিশাহারা হয়ে পড়েছে। জনগণের প্রতি আস্থা হারিয়ে বিদেশিদের কাছে গিয়ে ধরনা দিচ্ছে। নালিশ করছে। দেশের বদনাম করছে। চরম দেউলিয়াপনা ও বেহায়াপনা করছে বিএনপি নামক এই দলটি। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যারা রাজনীতিবিদ তারা সবসময় চিন্তা করি নির্বাচন বিষয়ে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একজন সফল (স্টেটম্যান) রাষ্ট্র পরিচালক, যিনি আগামী প্রজন্মের কী হবে তা নিয়ে ভাবেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করেন। কর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার ভালোবাসার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, কর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার যে মমতা এবং ভালোবাসা তা অতুলনীয়। আমি অসুস্থ থাকা অবস্থায় আমার জন্য শেখ হাসিনা যা করেছেন তা আমার মায়ের থেকে কোনো অংশেই কম নয়। তিনি তার কর্মীদের মমতাময়ী মায়ের মতো ভালোবাসেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে শেখ হাসিনা নিজেকেও অতিক্রম করেছেন। তার মেধা, সততা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে তিনি আওয়ামী লীগকেও অতিক্রম করে গেছেন। দেশের মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী তার যে গ্রহণযোগ্যতা তার ধারেকাছেও আমাদের কেউ নেই। বাংলাদেশে এখন যে ম্যাজিক্যাল উন্নয়ন ও অগ্রগতি হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে শেখ হাসিনার ম্যাজিক্যাল লিডারশিপ। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর শেখ হাসিনা সেই দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন তার নেতৃত্বে। শেখ হাসিনা জেগে থাকেন বলেই বাংলাদেশের মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এক সময় যুব রাজনীতি বলতে বোঝাত অস্ত্রবাজি এবং সন্ত্রাসী সংগঠন। বাংলাদেশ যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক প্রমাণ করেছেন যুব রাজনীতি মানে সন্ত্রাসী কোনো সংগঠন নয়। যুব রাজনীতি মানে হচ্ছে পড়াশোনার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করে রাজনীতি করা। এ সময়  আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে সুশৃঙ্খল উপস্থিতির জন্য যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের প্রসংশা করেন ওবায়দুল কাদের।