রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বালিশ পর্দা ছিঁচকে কাজ : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বালিশ ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে পর্দা কেনায় দুর্নীতিকে ছিঁচকে কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এর সঙ্গে বিএনপি আমলের হাওয়া ভবনের লুটপাট মেলালে চলবে না।

গতকাল আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের ছিঁচকে কাজ যারা করে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ; তারা কোনো এমপি কিংবা মন্ত্রী নন। এখানে হাওয়া ভবনের মতো লুটপাটের বিষয় নেই। যারা এমন অভিযোগ করে, তারা তো দেশটাকেই লুটপাট করে খেয়েছে। তিনি বলেন, এখন সরকারের কোনো বিকল্প ‘সেন্টার’ নেই। লুটপাটের কোনো ভবন এই সরকারের আমলে নেই, এটা আমি দাবি করে বলতে পারি। জাতীয় পার্টির বিভক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে এক সময় আমাদের জোট ছিল। তবে তাদের সঙ্গে আমাদের নির্বাচনী জোট থাকলেও আদর্শিক কোনো ঐক্য নেই। তিনি আরও বলেন, এখন জাতীয় পার্টি বিরোধী দল। তারা সত্যিকার অর্থের বিরোধী দল হিসেবে শক্তিশালী থাকুক এটা আমরাও চাই। বিরোধী দল নিজেরাই যদি নিজেদের দ্বন্দ্বে দুর্বল হয়ে যায়, এখানে তো আমাদের কিছু করার থাকে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা চাই- জাতীয় পার্টির ব্যাপারগুলো তারা নিজেরাই মীমাংসা করুক। এখানে প্রধানমন্ত্রীর কোনো দায়িত্ব নেই। তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকার তো আমাদের নেই। জাতীয় পার্টি তো আওয়ামী লীগের কোনো শাখা সংগঠন নয় যে, এটা আওয়ামী লীগকে দেখতে হবে। এটা তাদের বিষয়, তারাই দেখবে। সম্প্রতি পুলিশের ওপর একাধিক স্থানে হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি তৎপরতা একেবারে থেমে গেছে; এমন দাবি আমরা কখনা করব না। এখানে ছোটখাটো যে ঘটনাগুলো ঘটছে, আমরা মনে করি- এগুলো বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে হলেও ওরা হয়তো ‘টেস্ট কেস’ করছে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটানোর জন্য। ওরা বড় ধরনের কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন আশঙ্কা করছি। কাজেই আমরা সতর্ক।

এর আগে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। বৈঠকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও তাদের মদদদাতা ১৫০ জনের বিরুদ্ধে শোকজ পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। ওবায়দুল কাদের জানান, আজ থেকে অভিযুক্তদের এই চিঠি পাঠানো শুরু হবে। তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী ছিলেন, তাদের শোকজের সিদ্ধান্ত আগে থেকেই ছিল। আজকে তা বাস্তবায়নের ‘প্রসেস’ কীভাবে দ্রুত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামীকাল (আজ রোববার) থেকে প্রায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিস ইস্যু হবে। শোকজের জবাবের জন্য তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এমপি-মন্ত্রী যারা মদদদাতা তারাও শোকজ পাবেন। তবে তাদের নাম প্রকাশ করতে চাননি ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মদদদাতাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাও থাকতে পারেন। যাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও মদদ দেওয়ার অভিযোগ আছে, তারা সবাই শোকজ পাবেন। ‘বিএনপি না এলেও নির্বাচন উৎসবমুখর করার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নিজেই এমন কথা বলেছিলেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা মাঠে নেমেছি, কিন্তু এখন আবার কেন শাস্তি দেবে?’- তৃণমূলের এমন বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেছেন, ‘কোনো রেকর্ড আছে? হাওয়া থেকে বললে তো হবে না।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আহমদ হোসেন, অ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বি এম মোজাম্মেল হক, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর