আবহাওয়ার পূর্বাভাস ছিল বৃষ্টির। হয়েছেও। মুষলধারে না হলেও দিন থেকে কেটে নিয়েছে পৌনে ৩ ঘণ্টা। তাতেই বৃষ্টি সৌভাগ্যের ‘প্রতীক’ হয়ে হারের শঙ্কায় দুলতে থাকা ম্যাচটিকে টেনে নিয়ে গেছে পঞ্চমদিনে। আজ যদি বৃষ্টি ভাসিয়ে নেয় ম্যাচের পুরোটা সময়, তাহলে মান হারালেও ম্যাচ হারের লজ্জায় পড়বেন না সাকিবরা। সেটা অলীক কল্পনাই! ১১৫ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞ বাংলাদেশ যেভাবে ধরাশায়ী হয়েছে নবাগত আফগানিস্তানের কাছে, তাতে চতুর্থ দিনে হেরে গেলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। এমনকি বলারও কিছু ছিল না। কারণ ইতিহাস বলে চতুর্থ দিনে বহু টেস্ট হারের রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশের। এমনকি তৃতীয়দিনেও হেরেছে। বৃষ্টিতে গতকাল খেলা বন্ধ হওয়া পর্যন্ত ম্যাচের যে চিত্র, তাতে ম্যাচ বাঁচাতে সাকিব বাহিনীকে হাতে ৪ উইকেট নিয়ে ব্যাটিং করতে হতো আরও ১০৩ ওভার। রেকর্ড গড়ে ইতিহাস লিখতে সাকিবদের করতে হবে আরও ২৬২ রান। চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড টাইগারদের সাকল্যে ৩টি। সর্বোচ্চ ২১৭ রান তাড়া করে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ১৯১ রান তাড়া করে শ্রীলঙ্কা এবং ১০১ রান টপকে জিতেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেখানে ৩৯৮ রান, ছোট্ট ডিঙ্গিতে উত্তাল আটলান্টিক পেরোনোর মতো! সেই কাজটি করতে দলের ব্যাটিং অর্ডারে ব্যাপক পরিবর্তন আনেন সাকিব। প্রথমবারের মতো মুমিনুলকে ৫ নম্বরে, মোসাদ্দেক সৈকতকে ৩ নম্বরে ব্যাটিং পাঠান। টাইগার অধিনায়কের এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ব্যর্থ করে দেন আফগান স্পিনার রশিদ খান, নবি, জহির খানরা। তাদের মায়াবী স্পিনে ১৩৬ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে ৬ উইকেট। টার্ন, লাইন-লেন্থ বুঝতে না পেরে শিক্ষানবিসের মতো আউট হয়ে দলকে আরও একটি পরাজয়ের সামনে এনে দাঁড় করিয়েছেন ক্রিকেটাররা। ম্যাচ বাঁচানো যে অসম্ভব সেটা স্বীকার করেই নিয়েছেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব, ‘ম্যাচ বাঁচানো খুবই কঠিন হবে। এজন্য আমাকে ও সৌম্যকে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করতে হবে। আমাকে ১৭০ ও সৌম্যকে ১২০ রানের ইনিংস খেলতে হবে। সেটা অবিশ্বাস্য। তারপরও আমরা চেষ্টা করব শেষ পর্যন্ত লড়াই করার। আমরা যে দীর্ঘদিন টেস্ট খেলছি, সেটা প্রমাণ করতে চাই।’ চটগ্রামে এটা ১৯ নম্বর টেস্ট। টাইগারদের জয় সাকল্যে দুটি। ড্র ৬টি এবং হার ১২টি। যদি আজ বৃষ্টিতে ভেসে যায় গোটা দিন, তাহলে ড্রয়ের সংখ্যা ৬ ছাড়িয়ে ৭ হবে। আর হেরে গেলে সংখ্যাটা ১২ থেকে ১৩ হবে।