মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ভারতের ড. কালাম স্মৃতি পদক পেলেন শেখ হাসিনা

মেট্রোরেলের জন্য পুলিশের আলাদা ইউনিট গঠনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রতিদিন ডেস্ক

মেট্রোরেলের জন্য পুলিশের আলাদা ইউনিট গঠনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গতকাল ড. কালাম স্মৃতি আন্তর্জাতিক উৎকর্ষ পদক ২০১৯’ তুলে দেন ড. কালাম আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের পৃষ্ঠপোষক এবং চেয়ারম্যান শ্রী টি. ড. শ্রীনিবাসন - বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পৃথক বিশেষ পুলিশ ইউনিট গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

গতকাল সকালে গণভবনে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-এমআরটির অগ্রগতির ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ অভিমত ব্যক্ত করেন। ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি-ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে ‘ঢাকা মহানগরী ও এর আশপাশের এলাকায় এমআরটি লাইন নির্মাণের জন্য টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান, ২০৩০’-এর বাস্তবায়নের সার্বিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি ৬ লাইন এমআরটির পাশাপাশি ১, ২, ৩, ৪, ৫ লাইন এমআরটির অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন। খবর বাসস।

দেশে এই প্রথমবারের মতো মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা-জাইকার সহযোগিতায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী এই মেগা প্রকল্পের দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কিছু নির্দেশনা দেন। সভায় জানানো হয়, আগস্ট নাগাদ ৬ লাইন প্রকল্পটির (উত্তরা-আগারগাঁও-মতিঝিল) ৩০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া সভায় আরও জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ৬ লাইনের এমআরটির উত্তরা আগারগাঁও অংশের প্রায় ৪৬ শতাংশ ও আগারগাঁও-মতিঝিলের ২৪ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান, সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রতিরক্ষা সচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সেলের সিইও ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান মিয়া এবং জাইকার প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৬ উত্তরা থার্ড ফেস থেকে শুরু হয়ে পল্লবীর মধ্য দিয়ে রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ এবং ফার্মগেট, হোটেল সোনারগাঁও, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, তোপখানা রোড ও বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত বিস্তৃত। সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এমআরটি-৬ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে জাইকা ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিচ্ছে। প্রকল্পের বাকি টাকা বাংলাদেশ সরকার জোগান দেবে। দ্রুতগামী মেট্রোরেলটি উত্তরা থেকে মিরপুর ও ফার্মগেট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াত করবে। এতে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবে। প্রতি ৪ মিনিট পর পর এক এক করে প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন থামবে।

এ প্রকল্পের ১৬টি স্টেশন হলো : উত্তরা উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও বাংলাদেশ ব্যাংক। এমআরটি-৬ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নগরবাসী তাদের অতিকাক্সিক্ষত আরামদায়ক পরিবহনে ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। তারা বর্ধিত রাজধানীর যানজটের সড়কগুলোর পরিবহনে দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর যাত্রা থেকে নিষ্কৃতি পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মাত্র ৩৮ মিনিটে একজন যাত্রী উত্তরা পৌঁছতে পারবেন।

শেখ হাসিনা-এ পি জে কালাম পুরস্কার

ড. কালাম ‘এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেশবাসীকে উৎসর্গ করলেন : বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ড. কালাম স্মৃতি ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডস গ্রহণ করে তা দেশবাসীর উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে এক অনুষ্ঠানে ড. কালাম স্মৃতি আন্তর্জাতিক অ্যাডভাইজরি কমিটির পক্ষ থেকে ড. কালাম স্মৃতি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান উপদেষ্টা টি পি শ্রীনিবাসন ও সংস্থাটির চেয়ারপারসন দীনা দাস শেখ হাসিনার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার গ্রহণের সময় দেশের জনগণের প্রতি কর্তব্য পালনে তাঁর দায়বদ্ধতার প্রতি প্রশংসার নিদর্শন হিসেবে এ পুরস্কার গ্রহণ করছেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি এই কর্তব্য পালনই আমার জীবনের মূলমন্ত্র, যেমনটি ছিল আমার পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। আমি এ পুরস্কার দেশের জনগণের উদ্দেশে উৎসর্গ করছি।’ অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা, রাজনীতিবিদ, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীসহ ভারত ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিদেশি কূটনীতিক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য অবদান, জনকল্যাণ বিশেষত নারী ও শিশুদের কল্যাণে বিশেষ অবদান রাখা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার জন্য এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালামের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তামিলনাড়ু সরকার এ পুরস্কার প্রবর্তন করে। ২০১৫ সালের ২৭ জুলাই এ পি জে আবদুল কালামের মৃত্যুর পর সে বছরই ৩১ জুলাই তামিলনাড়ুর সে সময়কার মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা ভারতরত্ন এ পি জে আবদুল কালামের নামে এ পুরস্কার চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

সর্বশেষ খবর