বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুর প্রতিনিধি

প্রতিটি বিভাগীয় শহরে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

গাজীপুরে গতকাল শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজের ১ম স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্যশিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নে দেশের সব বিভাগে পর্যায়ক্রমে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঢাকার পর চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। গতকাল সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুরের তেঁতুইবাড়ি এলাকায় শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে নার্সিং কলেজের প্রথম সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে তার সরকার সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকে সমানভাবে উৎসাহিত করছে। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং নার্সিং কলেজ।

তিনি বলেন, নার্সিং পেশাকে সম্মানজনক আধুনিক করা হয়েছে। সেবার মধ্য দিয়ে মানুষের মন জয় করতে নার্সদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই পেশার উন্নয়নে আরও কাজ করবে তার সরকার।

হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সহসভাপতি এবং বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা। কোর্স সম্পন্নকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজের সিইও মো. তৌফিক বিন ইসমাইল। এ ছাড়া গ্র্যাজুয়েশন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন মালয়েশিয়ার স্কুল অব মেডিসিন কেপিজে হেলথ কেয়ার ইউনিভার্সিটি কলেজের উপাচার্য ও ডিন প্রফেসর দাতো ডা. লোকমান সাঈম। গ্র্যাজুয়েশন অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খায়রুল ইসলাম অনুষ্ঠানে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন। শেখ হাসিনা বলেন, বরাবরই নার্সিং পেশাকে অবহেলার চোখে দেখা হতো। তবে বর্তমান সরকার নার্সদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়েছে। যার ফলে বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পেশা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে নার্সিং। নার্সিং শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি। মানবতার সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে নার্সদের প্রতি আহ্বান জানান। এ ছাড়া নার্সিং পেশায় আসার আহ্বানও জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশে ও বিদেশে বিশেষায়িত নার্সদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার জোগান দিতে তাদের প্রশিক্ষণকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের নিজেদেরও এখন প্রচুর নার্সের দরকার। তা ছাড়া বিভিন্ন ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি সেখানেও আমাদের বিশেষায়িত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স দরকার হবে।

ইতিমধ্যে বিদেশ থেকেও নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসছি। বিদেশে যেমন প্রশিক্ষণ চলবে তেমনি দেশেও যেন শিক্ষার মানটা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয় সে ব্যবস্থাটাও আমরা নেব। এ সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ এমপি, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আখতারউজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে রুবিনা জেসমিন (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ), পোস্ট বেসিকের শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার (২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ) এবং রীনা আক্তার (২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ)-কে প্রধানমন্ত্রী পদক প্রদান করেন প্রধান অতিথি শেখ হাসিনা। ৭৯ জন শিক্ষার্থী, এর মধ্যে ৫৭ জন পোস্ট বেসিকের শিক্ষার্থী প্রথম ব্যাচে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী এবং শেখ রেহানা গ্র্যাজুয়েশন অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন।

সর্বশেষ খবর