বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ ব্যাংক, গাজীপুরের ডিসি ও ময়মনসিংহের এসপিকে দুদকের চিঠি

বনানীর গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বন্ধ, জাপা এমপি জিন্নাহ ও বিএনপি নেতা শোকরানাকে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও ময়মনসিংহের পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। গতকাল এই চিঠি পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য। তিনি জানান, চট্টগ্রামে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকারি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সদস্যদের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা খতিয়ে দেখতে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপারকে দুদক চিঠি দিয়েছে। এদিকে কমিশনে আসা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট ছয়টি অভিযান চালিয়েছে দুদক। অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস সংযোগ ব্যবহারের অভিযোগে রাজধানীর বনানীতে গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলে অভিযান চালানো হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি এনফোর্সমেন্ট টিম তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ওই হোটেলে অভিযানে যায়। অভিযানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদক টিম দেখতে পায়, ৩০টির মতো গ্যাস সিলিন্ডার পাশাপাশি সাজিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে মনে হয় এসব সিলিন্ডার ব্যবহার করে হোটেলের রন্ধন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আসলে মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া অবৈধ গ্যাস লাইন ব্যবহার করে সেখানে চুলা, গ্রিলার, স্টার বার্নারসহ বিভিন্ন রকমের সরঞ্জাম চালানো হচ্ছিল। দুদক টিম আরও জানতে পারে, হোটেলটি প্রায় ৩১ মাস ধরে পরিচালনা করা হচ্ছে এবং এতে কখনো গ্যাস সংযোগ গ্রহণ করা হয়নি। পাশের একটি বাসার গ্যাস লাইন থেকে অবৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ নিয়ে দৈনিক প্রায় ৭০৫ ঘনফুট গ্যাস ব্যবহার করছিল হোটেলটি। ৩১ মাসে প্রায় ৫০ লাখ ৩৩ হাজার টাকার গ্যাস অবৈধভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। তিতাস গ্যাসের টিম হোটেলের অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে জরিমানার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দুদকের অন্য একটি এনফোর্সমেন্ট টিম রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল এবং সদর ভূমি অফিসে অভিযান পরিচালনা করেছে। এদিকে অবৈধ করাতকল স্থাপনের মাধ্যমে বন উজাড় করার অভিযোগে বরগুনার আমতলী উপজেলায় অভিযান চালিয়েছে দুদকের আরেকটি এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানে দুদক টিম দেখতে পায়, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আশপাশে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ করাতকল গড়ে উঠেছে। ২০১২ সালের ‘করাতকল নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা’ অনুযায়ী সরকারি বনভূমির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন না করার বিধিনিষেধ রয়েছে।

জাপা এমপি জিন্নাহ ও বিএনপি নেতা শোকরানাকে দুদকের চিঠি : জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ ও বগুড়া জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা মো. শোকরানার সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের দুজনকে সম্পদের হিসাব-বিবরণী দুদকে জমা দিতে বলা হয়েছে। দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষর করা চিঠি সোমবার জাপার এমপি জিন্নাহর ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিএনপি নেতা শোকরানার সম্পদের হিসাব-বিবরণী চেয়ে মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়েছেন কমিশনের পরিচালক কাজী শফিকুল আলম। সংস্থাটির জনসংযোগ কার্যালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, জিন্নাহ ও শোকরানার বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে তাদের বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। জিন্নাহকে পাঠানো নোটিসে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশনের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে ও বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাকে নিজের, নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ দিতে বলা হয়েছে। একইভাবে বিএনপি নেতা শোকরানাকে নিজের, নির্ভরশীল ব্যক্তিবর্গের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ দিতে বলা হয়েছে। নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশন মনে করে, শোকরানা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে ও বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন।

সর্বশেষ খবর