সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পাল্টাপাল্টি স্লোগানে মুখর মধুর ক্যান্টিন

ছাত্রদল ছাত্রলীগের শোডাউন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বহুদিন পর মধুর ক্যান্টিনে গতকাল ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের সহাবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। তবে ছাত্রলীগ আর ছাত্রদলের পাল্টাপাল্টি স্লোগানে মুখর হয়েছিল রাজনীতির আঁতুড়ঘরখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন। সকালে ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতারা সেখানে এলে উভয় সংগঠনের স্লোগানে উপ্তত্ত হয়ে ওঠে মধুর ক্যান্টিনের বাতাস। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময় করলেও মধুতে এসে ছাত্রলীগের ‘সহযোগিতামূলক আচরণ’ পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি ফজলুল রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে প্রায় ২০০ নেতা-কর্মী নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে আসেন ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তাদের আসার আগে থেকেই মধুর ক্যান্টিনে বসে ছিলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদারও এ সময় সেখানে ছিলেন। মধুতে প্রবেশের পর ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে শুধু লেখক ভট্টাচার্যই তাদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন। মধুর ক্যান্টিনে প্রবেশের পর থেকেই ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের স্লোগানের মুখে পড়তে হয় ছাত্রদল নেতাদের। এ সময় তারা ‘ভুয়া/ভুয়া, ছাত্রদলের ঠিকানা/ঢাবি হবে না, ছাত্রদলের গুন্ডারা/হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। অন্যদিকে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরাও জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার নামে স্লোগান দেন। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে এ পাল্টাপাল্টি স্লোগান চলার পর ছাত্রদল নেতারা মধুর ক্যান্টিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে উপাচার্য কার্যালয়ের দিকে যান। এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা। এ সময় সংগঠনটির সভাপতি ফজলুল রহমান খোকন বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কিন্তু গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। কিছুটা থাকলেও পুরোপুরি সহাবস্থান নেই।’ সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ‘আমাদের ওপর উসকানিমূলক স্লোগান হয়েছে। তাদের (ছাত্রলীগ নেতাদের) সঙ্গে সৌহার্দ্য বা সম্প্রীতি বিনিময় করতে গেলে আমরা সেই সহযোগিতা পাইনি।’ ছাত্রদলের কর্মসূচি সম্পর্কে শ্যামল বলেন, ‘আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হলো ছাত্রদের কল্যাণ এবং ক্যাম্পাসগুলোতে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা।’ এদিকে ছাত্রদলের মধুর ক্যান্টিনে আসার বিষয়ে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসে যে-কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ক্যাম্পাসকে কেউ অস্থিতিশীল করতে চাইলে তা প্রতিহত করা হবে।’ ছাত্রদলের অভিযোগের বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে যদি কেউ স্বৈরশাসকের নামে স্লোগান দেয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করে, তাদের তো আমরা স্বাগত জানাতে পারি না। তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হতো, তাহলে আমরা তাদের স্বাগত জানাতাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিনষ্ট না করে রাজনীতির করার অধিকার সবার আছে।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের কমিটিতে দুই-তিন সন্তানের বাবা, ৪১ বছর বয়সীদের ছাত্রদের নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। তাদের এ কাউন্সিলের ব্যাপারে আদালতের নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। সেটি লঙ্ঘন করে যে ধরনের প্রক্রিয়ায় তারা নেতৃত্ব নির্বাচন করেছে, তা দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব আছে, এমন ছাত্রদের হাতে নেতৃত্বের ভার তুলে দিলে সবাই ভালোভাবে নিত।’

সর্বশেষ খবর