সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ

খালেদা জিয়ার মুক্তি আদায় করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

খালেদা জিয়ার মুক্তি আদায় করতে হবে

রাজশাহীতে গতকাল বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেছেন, কারাবন্দী খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। তার মুক্তি আদায় করতে হবে। তাই এখন থেকে তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে দলের নেতারা রাজশাহী বিভাগের কর্মীদের আহ্বান জানান।

গতকাল বিকালে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠের পূর্বপাশে পাঠানপাড়া এলাকায় এই সমাবেশ হয়।   এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া এখন হেঁটে বাথরুমে যেতে পারেন না। বসে খেতে পারেন না। ১৮ মাস ধরে তাকে টেলিভিশন দেখতে দেওয়া হয় না। দুটো মাত্র পত্রিকা দেওয়া হয়। কারও সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। তার মুক্তি হবে না। আদায় করতে হবে। এ জন্য নেতা-কর্মীদের তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে।

তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি তত্ত্ব দিয়েছেন ক্যাসিনোর টাকা নাকি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে মাসিকভাবে যায়। কী চমৎকার আবিষ্কার আপনার! ক্রিয়েটিভ ইনফরমেশন মিনিস্টার, বলা যাবে। কারণ, এই তত্ত্ব তিনি আবিষ্কার করেছেন। এই তত্ত্ব দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না। তিনি বলেন, এক বছরে ২৭ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে সুইস ব্যাংকে। তার চেয়েও বড় অপরাধ আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ৩০ তারিখের ভোট ২৯ তারিখে করেছে। সরকারের লোকজন বলে সমাবেশ করতে বাধা নেই। কিন্তু গ্রেফতার, বাধা চলছেই। আমার সন্দেহ হয় সরকার কে চালায়। এ সময় মির্জা ফখরুল সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত নির্বাচনের আগে ২৬ লাখ লোককে আসামি করে ১ লাখ মামলা করা হয়েছে। তালিকা করে ১০০ জনের নাম দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭০০ অজ্ঞাতনামা। সে অজ্ঞাতনামায় একজনকে ধরে এনে পুলিশ বলে, দাও। তা না হলে চালান। এখানে যারা উপস্থিত আছেন, তাদের অর্ধেকের বেশি মানুষের নামে মামলা আছে। সমাবেশে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তারা পুলিশের ওপর ভর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। পুলিশের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা কাকে পাহারা দিচ্ছেন ভাই? আজকে নেতা-কর্মী খুন হচ্ছে, গুম হচ্ছে। যখন সময় আসবে, তখন আপনারা ধরা খাবেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ১৭ কোটি মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। আমরা যদি প্রতিজ্ঞা করে রাস্তায় নামি, অবশ্যই খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা ইকবাল হাসান টুকু, মিজানুর রহমান মিনু, কামরুল মনির, হারুনার রশীদ খান, আবু বকর সিদ্দিক, মোরতাজুল করিম বাবলু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শ্যামা ওবায়েদ, শাহীন শওকত, গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ এমপি, নাদিম মোস্তফা, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, আনোয়ার হোসেন, আবুল কালাম আজাদ শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। সমাবেশে বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের রাজশাহী বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। তবে রাজশাহীর সঙ্গে বিভিন্ন রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সমাবেশে যোগ দিতে তাদের বেগ পেতে হয়।

রাজশাহীতে হঠাৎ বন্ধ বাস চলাচল : হঠাৎ করে রাজশাহী মহানগর থেকে আন্তঃজেলার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। বৃষ্টির অজুহাতে গতকাল সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন তারা। তবে ঢাকা রুটে বাস চলাচল করছে। বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে এ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু। তিনি বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা যাতে মহাসমাবেশে যোগ দিতে না পারেন সে জন্য অঘোষিতভাবে এ পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে সকাল থেকে হঠাৎ করে অঘোষিতভাবে আন্তঃজেলা রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। দূর-দূরান্তে যাতায়াতকারী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন বেশি। তবে সকাল থেকে হঠাৎ করে এ বাস বন্ধ কেন- জানতে চাইলে রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন বা সড়ক পরিবহন গ্রুপের কোনো নেতা এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর