বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ওয়াশিংটন পোস্টকে শেখ হাসিনা

লড়াই নয়, রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

লড়াই নয়, রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কারও সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে এর শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় বাংলাদেশ। ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। ওয়াশিংটন পোস্টের সাপ্তাহিক সাময়িকী টুডেস ওয়ার্ল্ডভিউয়ের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক সাংবাদিক ঈশান থারুর লেখা ‘রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের বোঝা হয়ে থাকতে পারে না : বলেন প্রধানমন্ত্রী’ শিরোনামে এ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়। এতে শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মনে করে, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় কাজ হবে, তা হলে তো খুবই চমৎকার। তবে আমি এ পরামর্শ দিতে পারি না।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘তিনি এ ইস্যুটি নিয়ে মিয়ানমারের কার্যত বেসামরিক নেতা নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। সু চি এ পরিস্থিতির জন্য দেশটির সামরিক বাহিনীকে দায়ী করেছেন। তিনি আমাকে বলেছেন- সেনাবাহিনী তার কথা খুব একটা শোনে না। ভারতে ২০১৬ সালে আয়োজিত আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনকালে তাদের মধ্যে ওই বৈঠকটি হয়। এর পর থেকে সু চি দেশটির সামরিক বাহিনীর সিদ্ধান্তকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন এবং এমনকি তিনি জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠীটিকে বোঝাতে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটিও উচ্চারণ করেন না। ওই সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা আরও বলেন, এখন আমি দেখতে পাচ্ছি তিনি (সু চি) তার অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।’ সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে বলা হয়, ইউএন কমিশনের একটি প্রতিবেদন সতর্ক করে দিয়েছে, ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে যে ধরনের সহিংসতার কারণে রোহিঙ্গারা দেশত্যাগে বাধ্য হয় এখনো সেখানে একই অবস্থা বিরাজ করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মিয়ানমার সরকারের একটি অংশের ওই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার জোরালো প্রমাণ মিলেছে। সেখানে আবারও গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে। মিয়ানমার সরকার গণহত্যা ঠেকাতে, গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করতে ও গণহত্যার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের শাস্তি দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াংহি লি এ মাসের গোড়ার দিকে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সহিংসতা দমনে মিয়ানমার কিছুই করেনি। রাখাইনে এখনো যেসব রোহিঙ্গা আছেন, তারা ২০১৭ সালের আগস্টে সহিংসতার সময়কার মতোই ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।

নিবন্ধটিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের ছোট একটি দলের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে দেশটির সঙ্গে চুক্তি হলেও শরণার্থীদের অধিকাংশ রাখাইনে ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছে। তরুণী ও নারীরা অবৈধ মানব পাচারের শিকার হচ্ছে- এমন রিপোর্টের প্রসঙ্গও তিনি উল্লেখ করেন। নিবন্ধে বলা হয়, গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই সামাজিক অবস্থার অসমর্থতা বুঝতে হবে। তিনি আরও বলেন, তার দেশ ‘মিয়ানমারের নিজেদের সৃষ্ট সংকট’ মোকাবিলা করছে।

সর্বশেষ খবর