বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-ভারত সিইও ফোরাম হবে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে

ঘোষণা দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ দিতে শীর্ষ উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে সিইও ফোরাম গঠন করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নয়াদিল্লি সফরে গেলে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এই ফোরাম গঠনের বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর উদ্দীন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ সরকারি পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে নানা ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তাতে সরাসরি উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী পর্যায়ের অংশগ্রহণ থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে তারা সফরের অংশ হয়, পৃথকভাবে বেসরকারি খাতের সঙ্গে সভাও করে, কিন্তু ওই সব সভার সিদ্ধান্ত সরকারের নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে খুব বেশি আলোচনায় আসে না। প্রস্তাবিত ফোরামটি গঠিত হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া ছাড়াও নিজেদের সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দুই দেশের বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা বা কোম্পানির সিইও (প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) এবং সিনিয়র ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে এই ফোরাম গঠন করা হবে। ফোরামে দুই দেশের ১০ জন করে মোট ২০ জন প্রতিনিধি থাকবেন। উভয় দেশের সরকার এই প্রতিনিধি মনোনীত করবে। প্রয়োজনে এই ফোরাম বিশেষ কোনো খাতের প্রতিনিধিকে সহযোগী সদস্য হিসেবে অথবা অতিথি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। গঠিত হওয়ার পর এই ফোরাম বছরে একবার বা প্রয়োজনে একাধিকবার পালাক্রমে (নয়াদিল্লি-ঢাকা) বৈঠকে মিলিত হবে। এসব বৈঠকে গৃহীত সুপারিশ উভয় দেশের সরকারকে দেওয়া হবে, যাতে করে একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা যায়। সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত ফোরামের টার্মস অ্যান্ড রেফারেন্স তৈরি নিয়ে বেশ কয়েক দফা খসড়া চালাচালি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। সর্বশেষ ১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রাপ্ত খসড়া অনুযায়ী প্রস্তাবিত ফোরাম বস্ত্র, ওষুধ, চামড়া, পাট, জ্বালানি, কৃষি ও জাহাজি পণ্য, অটোমোবাইল নির্মাণ উপকরণ এবং সেবা খাত যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি ও পর্যটন বিষয়ে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরকারকে সুপারিশ দেবে। তবে সময় সময় এই ফোরাম সম্ভাবনাময় শিল্প ও সেবা খাতগুলোকে আলোচনার জন্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।

দুই দেশের কোম্পানি ও ব্যবসায়ী গ্রুপগুলোর মধ্যে জোট তৈরি করা, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সমস্যাগুলো দূর করে সমন্বয় তৈরি এবং পণ্যের মানোন্নয়নসহ তৃতীয় দেশে বাণিজ্যের সম্ভাবনা চিহ্নিত করা হবে এই ফোরামের প্রধান উদ্দেশ্য। এমনকি সরকারি পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে আলোচনার জন্য বাণিজ্যিক ইস্যুগুলো চিহ্নিত করবে এই ফোরাম।

সর্বশেষ খবর