সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

কুমিল্লা সীমান্তের যে বাড়ি থেকে আটক

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা সীমান্তের যে বাড়ি থেকে আটক

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের মুনির চৌধুরী নামের এক পরিবহন ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি সম্রাট ও এনামুল হক আরমানকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বাড়ি থেকে রবিবার ভোরে র‌্যাব তাদেরকে আটক করে। মুনির চৌধুরী জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। সম্রাট ও আরমান গত তিন দিন ধরে এই বাসায় পালিয়ে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সম্রাট কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ওই এলাকাটি ভারত সীমান্তবর্তী। স্থানীয়রা জানান, আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন বাচ্চু সম্রাট বাহিনীর সদস্য। তার মাধ্যমেই সম্রাট মুনির চৌধুরীর বাড়িতে অবস্থান নেন। সেখান থেকে সীমান্ত পার হয়ে তার ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। সম্রাটের বাড়ি আলকরা ইউনিয়ন সংলগ্ন ফেনী জেলায়। তিনি ফেনীর মেয়র ও স্টার লাইন বাসের মালিকদের একজন মো. আলাউদ্দিনের ভগ্নিপতি। মনির চৌধুরী ফেনীতে থাকেন। তিনিও স্টার লাইন বাসের পরিচালক। ফেনীর মেয়র আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছেন, মনির আমাকে বলেছে তিন দিন আগে তারা (সম্রাট ও আরমান) ওই বাসায় গেছে। রবিবার সকালেই তারা ঢাকা ফিরে যাবে বলে জানিয়ে রেখেছিল। তার আগেই র‌্যাব তাদের গ্রেফতার করে।

আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক হেলাল বলেন, মুনির চৌধুরী আগে শিবির করতেন। এখন স্থানীয় জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিত। তবে তিনি তার পদবি জানাতে পারেননি। মনিরের স্ত্রীর ভাই হাজী আলাউদ্দিন স্টার লাইন পরিবহনের মালিক এবং ফেনী পৌরসভার মেয়র। আলাউদ্দিন এক সময় জাতীয় পার্টি করলেও এখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছেন। চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক হেলাল বলেন, ওই বাসায় মনির বা তার পরিবারের কেউ থাকত না। সেখানে যে সম্রাট বা আরমান আছে, এটাও আমরা জানতাম না। তবে ফেনী পৌরসভার মেয়র আলাউদ্দিনকে গত ২-৩ দিন ঘনঘন ওই বাড়িতে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। মনির চৌধুরীর ভাতিজি সামিয়া জান্নাত বলেন, এক সপ্তাহ আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে এই বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। সম্রাট ও আরমান এই বাড়ি থাকতেন কিনা তা তার জানা নেই। তবে সম্প্রতি মনির চাচা প্রায়ই বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন। শনিবার সন্ধ্যায়ও তাকে দেখা গেছে। রাতে এই বাড়িতে অভিযান চালায় র‌্যাব। এরপরই সম্রাট ও আরমানকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। র‌্যাব-১১ কুমিল্লা কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার প্রণব কুমার বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে র‌্যাবের কয়েকটি গাড়ি কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের আশপাশে অবস্থান নেয়। র‌্যাব বিভিন্ন সড়কের মধ্যে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। রাতে র‌্যাব গ্রামটি ঘেরাও করে রেখেছিল। কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেয়নি। এরপর সম্রাট ও আরমানকে আটক করে। র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেছেন, আত্মগোপনে থাকার জন্য সম্রাট বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছিল। তাদের গ্রেফতার করতে অনেক কষ্ট হয়েছে।

সর্বশেষ খবর