শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গারা পাসপোর্ট পাচ্ছে কীভাবে

খোঁজে মাঠে দুদক

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পেতে সহায়তাকারীদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রামের দুই পাসপোর্ট অফিসে আটক করা ১২৯টি আবেদনের সূত্র ধরে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রাথমিক সন্ধানে সহায়তাকারী হিসেবে কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে। এ চক্রে জনপ্রতিনিধি ছাড়াও রয়েছে পুলিশ, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, কথিত দালালসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সাইদ বলেন, ‘গত কয়েক মাসে চট্টগ্রামের দুই পাসপোর্ট অফিসে রোহিঙ্গা সন্দেহে শতাধিক আবেদন আটকে দেওয়া হয়েছে। এ আবেদনকারীরা রোহিঙ্গা কিনা তা তদন্ত করছে দুদক। দুদক ফাইল তলব করার পর তা তাদের সরবরাহ করা হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রাপ্তি ঠেকাতে আসলে পাসপোর্ট অফিসের কিছুই করার থাকে না। পাসপোর্টের আবেদনের জন্য জাতীয়তা সনদপত্র দেয় জনপ্রতিনিধি। বাংলাদেশি নাগরিক কিনা তা তদন্ত করে পুলিশ। তারপর নিজ দায়িত্ব থেকে পাসপোর্ট অফিস ফিঙ্গার প্রিন্ট এবং আচার-আচরণ দেখে রোহিঙ্গা আবেদনকারীদের আটক করছে।’ এ তদন্তের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ মন্তব্য করতে চান না দুদকের কেউ। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পাসপোর্ট আবেদনের সঙ্গে যেসব জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষর রয়েছে প্রাথমিকভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট পেতে যেসব দালাল সহায়তা করেছে তাদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে।’

জানা যায়, মনসুরাবাদ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট এবং পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে  প্রায় দেড় শতাধিক পাসপোর্টের আবেদনপত্র সংগ্রহ করে দুদক। যাদের প্রায় সবাই রোহিঙ্গা হিসেবে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করেছে পাসপোর্ট অফিস। দুই পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করা আবেদনগুলোতে যেসব জনপ্রতিনিধি জাতীয় সনদপত্র এবং সত্যায়ন করে তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে দুদক। মনসুরাবাদ বিভাগীয় পাসপোর্ট ও পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক মাসে বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস ৫৭টি এবং পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে ৭২টিসহ মোট ১২৯ আবেদন আটকে দেওয়া হয় রোহিঙ্গা সন্দেহে। আবেদনকারীদের বেশির ভাগই স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেছে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানা এলাকায়। দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পেতে সহায়তাকারী হিসেবে প্রাথমিক তদন্তে বেশ কয়েকটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে দুদক।

সর্বশেষ খবর