সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পুরো বাজেটের দাঁড়ি কমা সবই বাস্তবায়ন করব : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য পূরণে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, এই বাজেটে কোনো এসআরও বা প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে না। পুরো বাজেটের দাঁড়ি, কমা যা আছে, তা মেইনটেন করে সবই বাস্তবায়ন করা হবে। কর আদায়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এনবিআর স্বচ্ছ হলে দেশের সব খাত স্বচ্ছ হবে। গতকাল রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনে ‘দেশের সব কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিভাগের কমিশনার’দের উপস্থিতিতে এনবিআর আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সংস্থার সদস্য কালিপদ হালদার, জামাল হোসেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার ফখরে আলম প্রমুখ। সভার চলতি অর্থবছরের রাজস্ব ঘাটতি পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন এনবিআরের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এই ব্যাখ্যাকে অজুহাত আখ্যায়িত করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কর্মকর্তাদের বাজেট বই ভালো করে পড়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এবার বাজেটে দাড়ি-কমা যা আছে, তা বাস্তবায়ন করা হবে। যদি কোনো সমস্যা থাকে তা আগামী বছর পরিবর্তন করা হবে। কারণ ব্যবসায়ী, জনসাধারণ সবাই গ্রহণ স্বাগত জানিয়েছে। যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারি তাহলে দেশ পেছনে চলে যাবে। গত বছর ৫৫ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি ছিল। ইটস নট অ্যা মেটার অব জোক। এ টাকার ওপর ভিত্তি করেই কিন্তু অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। বাজেট যখন আসে, তখন বছরের প্রথম দিন থেকেই খরচ শুরু হয়ে যায়। সেটা কীভাবে পূরণ করব। তিনি বলেন, এনবিআর যদি স্বচ্ছ হয়, তাহলে বাংলাদেশের সব খাত স্বচ্ছ হয়ে যাবে। অনেকে ভয়ে ট্যাক্স দিতে আসে না, আসলেও ট্যাক্স নিতে চায় না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যারা কর দেওয়ার যোগ্য কিন্তু কর দিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। করযোগ্যদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অনেকে বিদেশে গিয়ে একদিনে যে কেনাকাটা করেন তার ১০ ভাগের এক ভাগও যদি কর দিত তাহলে দেশ আরও ভালো চলত। অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব ঘাটতির যেসব কারণ দেখানো হয়েছে, সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়, বিবেচনা করাও ঠিক হবে না। এনবিআরের পরামর্শেই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীতে কোনো অজুহাত শোনা হবে না।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, গত অর্থবছরে নির্বাচনের কারণে প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আহরণ কম ছিল। তবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে জুলাই মাসে রাজস্ব আয় ভালো হয়েছে। কিন্তু আগস্টে আবার রাজস্ব আয় কমেছে। এক্ষেত্রে কাস্টমস ও ভ্যাটে আদায় কম। তিনি বলেন, জরিপের মাধ্যমে নতুন করদাতা খুঁজে বের করা হয়েছে। এদের টিআইএন দেওয়া হয়েছে এবং রিটার্ন জমা দিতে বলা হয়েছে। টিআইএনধারী ও রিটার্ন জমাদানকারীদের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। এ বছর ৩০ লাখ রিটার্ন জমা পড়বে। এনবিআর সদস্য কালিপদ হালদার বলেন, বর্তমানে টিআইএনধারীর সংখ্যা ৪৪ লাখ ২৭ হাজার। আগামী তিন বছরের মধ্যে এটি এক কোটিতে উন্নীত করা হবে। সব টিআইএনধারী যাতে রিটার্ন জমা দেন সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এনবিআর সদস্য জামাল হোসেন বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, তা কেটে গেছে। ব্যবসায়ীরা ভ্যাট আইন ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন।

সর্বশেষ খবর