বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বুয়েটে বন্ধ সভা-সমাবেশ, অব্যাহত থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বুয়েটে বন্ধ সভা-সমাবেশ, অব্যাহত থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চলমান মাঠ পর্যায়ের আন্দোলনে আপাতত ইতি টেনেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে হত্যাকাণ্ডে  জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার না করা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। গতকাল বিকালে বুয়েট শহীদ মিনারে আনুষ্ঠানিক এক ব্রিফিংয়ে এসব জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা এ সময় বলেন, ভর্তি পরীক্ষার জন্য আন্দোলন শিথিল করা হয়েছিল। বুয়েটে সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের ১০ দফা দাবি ছিল। এর মধ্যে ১, ৪ এবং ৫ নম্বর দাবি ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিয়ে। ইতোমধ্যে অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে, অনেকে জবানবন্দি দিয়েছে, অনেকের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বিচার ব্যবস্থা তাদের স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যাবে এবং সুষ্ঠুভাবে বিচারকার্য সম্পন্ন করার মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। তারা বলেন, আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করব। চার্জশিট দাখিলের পর অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কারের আগে কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীরা অংশ নেব না। পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের মাধ্যমে আন্দোলন চলবে। সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দেওয়ার দাবিতে আজ তারা এক গণশপথ কর্মসূচির আয়োজন করবেন বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে গতকাল সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টা থেকে শুরু করে বিকাল পর্যন্ত ক্যাম্পাসের ভিতরে গ্রুপভিত্তিক বৈঠক করেছেন তারা। পরে সবার সম্মতির ভিত্তিতে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন তারা। বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ  কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রবিবার রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডে  জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিসহ ১০ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিল বুয়েট শিক্ষার্থীরা। আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার, আবরার হত্যা মামলার সব খরচ এবং ক্ষতিপূরণ বুয়েট থেকে বহন করা, দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্বল্পতম সময়ে মামলা নিষ্পত্তি, অবিলম্বে অভিযোগপত্র, বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনে জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিল এবং বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি ছিল এই ১০ দফার মধ্যে। এসব দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ছাত্র-ছাত্রীরা আলটিমেটাম দিলে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে  বৈঠকে বসেন উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। উপাচার্য দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও ছাত্র-ছাত্রীরা ১০ দাবির মধ্যে পাঁচ দাবি পূরণে আন্দোলন চলমান রেখেছিলেন। বুয়েটে প্রথমবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার জন্য গত রবি ও সোমবার আন্দোলন শিথিল করেছিলেন তারা।

সর্বশেষ খবর