বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুই মেট্রোরেলের অনুমোদন রাজধানীতে

ব্যয় ৯৪ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই মেট্রোরেলের অনুমোদন রাজধানীতে

ঢাকায় প্রায় ৯৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আরও দুটি মেট্রোরেল প্রকল্পসহ ১ লাখ ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ের ১০টি প্রকল্প গতকাল একনেকে পাস হয়েছে। এদিকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল করার বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)  সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার নতুন দুই মেট্রোরেলের মধ্যে একটি হবে ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ বিমানবন্দর থেকে নতুন বাজার, বাড্ডা হয়ে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত। এটি ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট বা এমআরটি লাইন-১ নামে পরিচিত হবে। আরেকটি মেট্রোরেল হবে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ সাভারের  হেমায়েতপুর থেকে আমিনবাজার, গাবতলী, মিরপুর-১, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২, নতুনবাজার হয়ে ভাটারা পর্যন্ত। এটি হবে এমআরটি লাইন-৫। প্রথম প্রকল্পে খরচ হবে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এটি শেষ হবে ২০২৬ সালের জুনে। দ্বিতীয় প্রকল্পে খরচ ৪১ হাজার কোটি টাকা। শেষ হবে ২০২৮ সালের ডিসেম্বরে।

শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক সভা শেষে প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। নতুন মেট্রোরেল প্রকল্প সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রকল্পগুলোকে সড়কের সবচেয়ে বেশি ব্যয়ের প্রকল্প বলা যায়। তবে নির্মাণ শেষ হলে ঢাকা হবে বিশ্বমানের শহর। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, তিনি বলেছেন, মেট্রোরেলের জন্য হাতিরঝিল যেন নষ্ট না হয়। এ ছাড়া মেট্রোরেলের কারণে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার কোনো ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গ্যাস সংযোগ আপনারা আগামীতে পাবেন না। আমরা সিলিন্ডারে যাচ্ছি, এখান থেকে আর ফেরার পথ  নেই। সিলিন্ডার ব্যবহারে যাতে লোকজন উৎসাহী হয়, এটা আমাদের দেখতে হবে। সরকারি বাসভবন বরাদ্দ পাওয়ার পরও কেউ বাসায় না উঠলে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে তার বরাদ্দই বাতিল করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যদি কেউ বাসায় বরাদ্দ পেয়ে না ওঠেন, একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরে তার বরাদ্দই আমরা বাতিল করে  দেব। অন্যদিকে একনেকে সব মিলিয়ে ১ লাখ ২৫  কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প পাস হয়েছে। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো, ১ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকার ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের বেগমগঞ্জ থেকে সোনাপুর পর্যন্ত চার লেনে উন্নীত করা; ৪২১ কোটি টাকার  ডোমার-চিলাহাটি-ডাউলাগঞ্জ, ডোমার-জলডাকা এবং জলঢাকা-ভাদুরদরগাহ-ডিমলা জেলা মহাসড়কের মান উন্নীত করা; ৭৩১ কোটি টাকার কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীত করাসহ ছয়না-যশোদল-দৌদ্দশত বাজার সংযোগ সড়ক নির্মাণ; ১ হাজার ৭১৯ কোটি টাকার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন; ১ হাজার ৮৮ কোটি টাকার ঢাকার মিরপুরের পাইকপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ; ১২৯ কোটি টাকার ঢাকার আজিমপুরে বিচারকদের জন্য বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ; ৫৮০ কোটি টাকার ইরিগেশন ম্যানেজমেন্ট ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্ট এবং ৭০  কোটি টাকার জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিরসনে সিলেট বন বিভাগে পুনঃবনায়ন ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।

চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল : চট্টগ্রামে মেট্রোরেল করা যায় কি না তা যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একনেক সভায়  সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে সচিবালয়ে ফিরে ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের  মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরুর জন্য। তার নির্দেশনা অনুযায়ী আমি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও  মেট্রোরেলের সঙ্গে যারা জড়িতদের বলেছি, অবিলম্বে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু করতে হবে।

সর্বশেষ খবর