বুধবার, ১৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

চেয়ারম্যান পদত্যাগের প্রশ্ন আসছে কেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চেয়ারম্যান পদত্যাগের প্রশ্ন আসছে কেন

বেসিক ব্যাংকের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা তদন্ত বা অভিযোগের অনুসন্ধান করছেন জানিয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত বলেছেন, এর দায়দায়িত্ব কমিশন বা চেয়ারম্যানের ওপর বর্তায় না। তাই এ ক্ষেত্রে দুদক চেয়ারম্যানের পদত্যাগের প্রশ্ন কেন আসছে বুঝতে পারছি না। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সোমবার সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপস বেসিক কান্ডে  ব্যর্থতার জন্য দুদক চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করলে গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমখি হন সংস্থাটির সচিব। দুদক সচিব বলেন, আমরা সংবাদে দেখেছি যে কমিশন শপথ ভঙ্গ করেছে, এমন বক্তব্য এসেছে। আমাদের কোনো কমিশনার বা চেয়ারম্যান শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। জালিয়াতির ঘটনায় বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুকে কেন আসামি করা হচ্ছে না, এমন প্রশ্নে দুদক সচিব বলেন, সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা কোথায় ব্যবহার হয়েছে, কিংবা জমা হয়েছে, নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। অর্থের উৎস, অর্থ কোন জায়গায় ব্যবহার হয়েছে, কোথায় সম্পদ হিসেবে কনভার্ট হয়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তি শেষে বা যাকে আইনের আওতায় আনার তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে, তাকে চার্জশিটভুক্ত করা হবে। মামলার তদন্তে বিলম্বের বিষয়ে তিনি বলেন, এ টাকা যখন চেকে নিয়েছে তা তোলার পরে টাকা যদি ব্যাংকে রাখা হতো, তাহলে উৎস পাওয়া যেত। টাকা নিয়ে একেকজন একেক কাজে ব্যবহার করেছে। সেখানে মানি লন্ডারিং হয়েছে। কাজেই অর্থের উৎস খুঁজতে গিয়ে অনেক সময় বিলম্ব হয়ে থাকে। সচিব বলেন, আপনারা যে মামলার কথা বলছেন সেগুলো জটিল প্রকৃতির মামলা। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে বেশির ভাগ টাকাই নগদে উত্তোলন হয়েছে, এ টাকা কোথায় ব্যবহার কিংবা জমা হয়েছে, আমাদের কর্মকর্তারা বের করতে পারেননি। তদন্ত কর্মকর্তারা টাকার লিংক খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত টাকা  কোথায় গিয়েছে, কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়েছে, তার লিংক বের করা সম্ভব হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময়ে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আবদুল হাই বাচ্চু। ওই সময়ে ব্যাংকটির দিলকুশা, গুলশান ও শান্তিনগর শাখা থেকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কয়েক হাজার কোটি টাকা উত্তোলন ও আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে, ঋণপত্র যাচাই না করে, জামানত ছাড়া জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান, অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে তখনকার পরিচালনা পর্ষদ ঋণ অনুমোদন করেছে। ২০১০ সালে এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। ২০১৫ সালে ১৫৬ জনকে আসামি করে ৫৬টি মামলা করে দুদক। আসামির তালিকায় ২৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা থাকলেও বাচ্চু বা পরিচালনা পর্ষদের কাউকে না রাখায় প্রশ্ন ওঠে। বিভিন্ন মহলের সমালোচনা এবং উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কয়েক দফা বাচ্চুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।

সর্বশেষ খবর