শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্দুকযুদ্ধে এক রাতে চারজন নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

দেশের তিন জেলায় এক রাতে বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কক্সবাজারে নাফ নদের তীরে বিজিবির গুলিতে নিহত হয়েছেন দুই রোহিঙ্গা মাদক চোরাকারবারি। আর জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে এক অপহরণ মামলার আসামি এবং ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে ডাকাতি মামলার আসামি পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরÑ

কক্সবাজার : কক্সবাজারের টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বিজিবির গুলিতে দুই রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। গতকাল রাত সাড়ে ৩টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে বিজিবির ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সল হাসান খান জানান। নিহতরা হলেন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা সুলতান আহম্মেদের ছেলে মো. আবুল হাসিম (২৫) এবং একই ক্যাম্পের আবু সিদ্দিকের ছেলে নূর কামাল (১৯)। বিজিবি কর্মকর্তা ফয়সল বলেন, নাফ নদের লম্বাবিল পয়েন্ট দিয়ে ইয়াবার একটি বড় চালান আসার খবরে তাদের একটি দল রাতে সেখানে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে মিয়ানমারের দিক থেকে একটি নৌকায় ৪/৫ জন লোক আসতে দেখে বিজিবির সদস্যরা তাদের থামার সংকেত দেন। নৌকাটি নদের কিনারে এলে দুজন লোক লাফ দিয়ে দৌড় দেয়। এসময় বিজিবি সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। একপর্যায়ে পালানোর চেষ্টায় থাকা মাদক চোরাকারবারিরা গুলি ছুড়তে শুরু করে। সঙ্গে সঙ্গে নৌকায় থাকা তাদের সহযোগীরাও বিজিবির দিকে গুলি শুরু করে। বিজিবি সদস্যরাও তখন আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করে। নৌকায় থাকা লোকজন এসময় পালিয়ে যায়। গোলাগুলি থামার পর ঘটনাস্থলে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। ফয়সল বলেন, এ অভিযানে বিজিবির ৩ সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা, একটি দেশি বন্দুক, দুটি গুলি ও দুটি কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে।

জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছেন, যার বিরুদ্ধে মুক্তিপণের জন্য অপহরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে এক ডজন মামলা রয়েছে থানায়। গতকাল ভোরে পাঁচবিবি উপজেলার ভূতগাড়ী গ্রামে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে পাঁচবিবি থানার ওসি মনসুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান। নিহত আমিনুল ইসলাম ওরফে ক্যাসেট (৪২) পাঁচবিবি উপজেলার পিয়ারা গ্রামের মৃত শাহাবুল ইসলামের ছেলে। তিনি অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদকের কারবার, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে এক ডজন মামলার পলাতক আসামি। ওসি বলেন, ক্যাসেট ও তার দলবল রাতে ভূতগাড়ী গ্রামে জড়ো হয়েছে খবর পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল সেখানে যায়। এ সময় পুলিশের দিকে তারা গুলি করলে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় ক্যাসেট গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন, অন্যরা পালিয়ে যায়। এ অভিযানে দুই পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন এবং তাদের পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।

ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ডাকাতি মামলার এক আসামি নিহত হয়েছেন। গতকাল রাত সাড়ে ১২টার দিকে গফরগাঁও-রসুলপুর আঞ্চলিক সড়কে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে ডিবি পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান। নিহত মোতালেব হোসেন (৪২) গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর ছয়ানি গ্রামের মৃত আবদুুল গফুরের ছেলে। পুলিশ বলছে, মোতালেব একটি ‘ডাকাত দলের সদস্য’ ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে ডাকাতির অভিযোগে পাঁচটি মামলা রয়েছে। ডিবির ওসি শাহ কামাল বলেন, একদল ডাকাত গফরগাঁও-রসুলপুর সড়কে ‘ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে’ খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের দুটি দল রাতে সেখানে অভিযানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দল গুলি করতে শুরু করে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। এ সময় মোতালেব গুলিবিদ্ধ হয় এবং তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ মোতালেবকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ অভিযানে আক্রাম হোসেন নামে পুলিশের একজন এসআই আহত হয়েছেন।

 পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও ১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর