অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াবে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। এ খাতে সারা বিশে^ সংস্থাটির মোট বিনিয়োগ ১ লাখ কোটি ডলার। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি বেসরকারি কোম্পানি ১৯ মিলিয়ন ডলার নিয়েছে। এর আগে আরও অনেক বেসরকারি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছে আইএফসি, যার ফিরতি বেশ ভালো। এ জন্য এ দেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে চায় সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় আইএফসির সঙ্গে এক বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজারের উন্নয়ন ও পুনর্গঠনে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। জলবায়ু তহবিলের অর্থায়নও বাড়ানো হবে। এ তহবিলের প্রায় অর্ধেকই দিয়ে থাকে বিশ্বব্যাংক।
গতকাল প্লানারি সেশনের পর বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলভিত্তিক কয়েকটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ‘দক্ষিণ এশিয়ার সড়ক নিরাপত্তা’ শীর্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ সেশন হয়। সেখানে অর্থমন্ত্রী একজন পেনেলিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ওই সেশনে দক্ষিণ এশিয়াসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার কথা উঠে আসে। এর আগে সকালে প্লানারি সেশনে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির শ্লথ প্রবৃদ্ধির ধারাকে বেগবান করতে হলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। শুধু তা-ই নয়, এ খাতের বিনিয়োগের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে।
প্লানারি সেশনে আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টিলিনা জর্জিভা বলেন, নীতিশক্তির কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাশাপাশি খারাপ নীতির প্রভাবটাও মাথায় রাখতে হবে। অর্থাৎ নীতি যেন জনকল্যাণকর হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ডেভিড ম্যালপাস বলেন, ‘আপনাদের কঠোর পরিশ্রম, নেতৃত্ব এবং পরিষেবার জন্য আমরা প্রস্তুত। ইউরোপ ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উচ্চতর শুল্ক বাধা, হতাশা এবং যুদ্ধের ফলে এক দশক ধরে বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত ছিল।’ মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি মরজেন্টাউ বলেন, নতুন বৈশ্বিক ব্যবস্থাটি দুটি ধারণার ভিত্তিতে হওয়া উচিত। প্রথমত সমৃদ্ধির, যেখানে কোনো সীমা থাকবে না। দ্বিতীয়ত বিস্তৃতভাবে সমৃদ্ধি এমন করে ভাগ করতে হবে, যেন সবাই উপকৃত হন। গতিশীল বিশ্ব অর্থনীতির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। এখানে প্রতিটি জাতির লোকেরা তাদের নিজস্ব জীবনযাত্রার মান বাড়ানোর এবং ক্রমবর্ধমানভাবে যেন সব অগ্রগতির ফল উপভোগ করার সুযোগ পান তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে মঞ্চে এসে ডেভিড ম্যালপাস বলেন, ‘আমি শতাধিক রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি শুনেছি, তাদের চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে ধারণা নিয়েছি। সবার একই প্রত্যাশা, উন্নত জীবন, চাকরি ও আয়ের উৎস বাড়ানো। এসব ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য সবাইকে একসঙ্গে উৎসাহিত করতে হবে। সভাপতি বলেন, ‘আমি বিশ্বব্যাংক গ্রুপে একটি পূর্ণাঙ্গ আপডেট উপস্থাপন করতে চাই। এটিতে আমি সাম্প্রতিক বিষয়গুলোকে সংযুক্ত করেছি। এর আগে পিটারসন ইনস্টিটিউটে আমি দুর্বল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বর্ণনা দিয়েছি, যা বিশেষত ইউরোপে দৃশ্যমান। পাশাপাশি বাণিজ্য ও ভূ-রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, স্বল্প বিনিয়োগের হার এবং স্বল্প উন্নয়ন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে আমাদের শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদিত পুঁজি বৃদ্ধি, প্যাকেজ বাস্তবায়ন করা হবে। আমাদের অংশীজনেরা যে সহায়তা দিয়ে থাকেন, সে জন্য তারা ধন্যবাদ পেতে পারেন।’