ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুকে নারীত্বের মর্যাদা রক্ষায় তেজোদীপ্ত আত্মত্যাগ বলে উল্লেখ করা হয়েছে রায়ে। নারীত্বের মর্যাদা রক্ষায় ভিকটিম নুসরাতের এ আত্মত্যাগ তাকে ইতিমধ্যে অমরত্ব দিয়েছে। তার এ অমরত্ব চিরকালের অনুপ্রেরণা। গতকাল ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশীদ চাঞ্চল্যকর নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দেন। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছে, সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা ফেনী জেলার অন্যতম বৃহৎ বিদ্যাপীঠ। ২ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রী সেখানে অধ্যয়নরত। এলাকার শিক্ষা সম্প্রসারণে এ মাদ্রাসার আলোকোজ্জ্বল ভূমিকায় কালিমা লিপ্তকারী এ ঘটনা বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। নারীত্বের মর্যাদা রক্ষায় ভিকটিম নুসরাত জাহান রাফির তেজোদীপ্ত আত্মত্যাগ তাকে ইতিমধ্যে অমরত্ব দিয়েছে। তার এ অমরত্ব চিরকালের অনুপ্রেরণা। পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, আসামিদের ঔদ্ধত্য কালান্তরে মানবতাকে লজ্জিত করবে নিশ্চয়। তাই দৃষ্টান্তমূলক কঠোরতম শাস্তিই আসামিদের প্রাপ্য। এ ছাড়া এ ঘটনায় সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে গাফিলতি করেছেন বলেও আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছে। এ সময় আদালত তাকে তিরস্কার করে। রায়ে আরও বলা হয়, এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিচার্য বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের অনুকূলে সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক, আসামিদের পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ মামলার ভিকটিম নুসরাতকে বিগত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টা ৪৫ থেকে ৯টা ৫০ মিনিটের মধ্যে ফেনীস্থ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের তৃতীয় তলার ছাদে ডেকে নেওয়া হয়। এ সময় নুসরাতের ওড়না দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে তাকে পুড়িয়ে হত্যা করায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত/০৩)-এর ৪ (১)/৩০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেক আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ প্রদান করা হলো। এ ছাড়া আসামিদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
