সোমবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিএনপি নেত্রী অন্য বন্দীদের চেয়ে বেশি সুবিধা পাচ্ছেন : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি নেত্রী অন্য বন্দীদের চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা লাভ করছেন। বেগম জিয়ার ইচ্ছা অনুযায়ী একজন গৃহপরিচারিকা কারাগারে তার সঙ্গে রাখা হয়েছে। তার মানে বেগম জিয়াকে কারাগারে সে সেবা করছে।

গত শনিবার সন্ধ্যায় আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর হিলটন হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে একজন প্রবাসীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারাগারের ইতিহাসে বা কোনো দেশে এমন নজির নেই কোনো নিরপরাধী গৃহপরিচারিকা একজন বন্দীর সঙ্গে কারাগারে অবস্থান করে। কিন্তু খালেদা জিয়া সেই সুবিধা ভোগ করছেন। বেগম জিয়াকে বিএসএমএমইউতে একটি কেবিনে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। বিএনপি বলছে, বেগম জিয়া অসুস্থ। কারণ তারা তার মুক্তির দাবিকে আন্দোলনের ইস্যু বানাতে এটা বলছে। কিন্তু বিএনপি তার মুক্তির আন্দোলন বা জনমত গঠন করতে পারেনি। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিগত কেয়ারটেকার সরকারের আমলে দায়েরকৃত মামলায় সাজা হয়। আরও মামলা চলমান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার সন্ত্রাসবাদ, দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। অভিযানগুলোতে আমরা ভালো ফল পাচ্ছি। কারণ মাদক একটি ব্যক্তি ও পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। আমি ক্ষমতায় আসার পর সর্বাত্মকভাবে দেশের ও জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে পুনরায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে, সে যেই হোক এবং যে দলই করুক না কেন। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদি আমাদের দলের কেউও অপরাধে জড়িত হয়, সে তৎক্ষণাৎ শাস্তি ভোগ করছে। অপরাধীরা অপরাধীই। আমরা অপরাধীদের অপরাধীর দৃষ্টিতেই দেখব এবং আমরা সেটাই দেখার চেষ্টা করছি। অন্যকে শিক্ষা দেওয়াটা নিজের ঘর থেকেই শুরু করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি সেটাই করছি (দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ) এবং আমি এটি অব্যাহত রাখব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে আরও ১০টি বোয়িং এয়ারক্রাফট কিনে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিমান নেটওয়ার্ক বাড়াতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুটি ও কানাডা থেকে তিনটি বোয়িং বিমান ক্রয় করা হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এক লাখ রোহিঙ্গার জন্য ভাসানচরে আবাস গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু কিছু এনজিও তাদেরকে সেখানে যেতে দিতে চায় না। শেখ হাসিনা বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের হীন স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আজারবাইজানের দূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দিকী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী : বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে সফরসঙ্গীদের নিয়ে গতকাল সকালে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর হায়দার আলিয়েভ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজারবাইজানের শিক্ষামন্ত্রী জেইহুন আজিজ বায়রামভ ও আজারবাইজানের দায়িত্বপ্রাপ্ত তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আল্লামা সিদ্দিকী বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহন করা বিমান। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, তিন বাহিনী প্রধান ও কূটনৈতিক কোরের ডিনসহ অন্যরা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

সর্বশেষ খবর