রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন

বাংলাদেশে জঙ্গি কর্মকাণ্ড কমেছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশে ২০১৮ সালে আগের তুলনায় জঙ্গি কর্মকান্ডের প্রবণতা ও বিস্তার কমেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। স্টেট ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক প্রতিবেদন ‘কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেররিজম ২০১৮-তে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী পরিকল্পিত হামলা ঠেকাচ্ছে, সন্দেহভাজন জঙ্গি নেতাদের গ্রেফতার আর অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক জব্দ করছে। জঙ্গি ও জঙ্গিদের অভয়ারণ্য গড়ে তোলার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে সরকার। তবে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের বিচারের প্রতিবন্ধকতা ও অভিযানের সময় নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-’ জঙ্গিবিরোধী ব্যাপক সফলতাকে সমালোচনার মুখে ফেলছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জঙ্গি কর্মকান্ডের জন্য বাংলাদেশ সরকার সবসময় স্থানীয় জঙ্গিদের দায়ী করেছে। এরপরও ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৪০টি হামলার ঘটনার দায় স্বীকার করেছে ভারতীয় উপমহাদেশের আল-কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস)। জঙ্গি সংগঠনগুলো তাদের মতাদর্শ প্রচারের জন্য এবং বাংলাদেশ থেকে অনুসারী সংগ্রহের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছে। আইএস ও আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু প্রকাশনা, ভিডিও ও ওয়েবসাইটে বাংলাদেশি যোদ্ধাদের কথা উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালেও বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন পূর্ণরূপে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় ছিল। আইনটিতে ২০১২ ও ২০১৩ সালে সংস্কার আনা হয়। ৫ এপ্রিল সরকার বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো দুটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রামে ট্রাইব্যুনাল দুটি গঠন করা হয়। বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বিদেশি যোদ্ধা নিয়োগ ঠেকানোর পদ্ধতিগত সীমাবদ্ধতা থাকলেও দেশটি বিদ্যমান আইনের অধীনেই সন্দেহভাজন বিদেশি যোদ্ধা ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের গ্রেফতার করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সীমান্ত ও প্রবেশ বন্দরে নিয়ন্ত্রণ জোরালো করতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়েছে। ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পদ্ধতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বহাল থাকলেও ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অথরিটি জানিয়েছে তাদের মানের ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশই পূরণ করে এটি। ২০১২ সালে সর্বশেষ জরিপের সময় থেকে এই মান ২৬ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ আইন প্রয়োগ সংক্রান্ত তথ্য ইন্টারপোলের সঙ্গে ভাগাভাগি করলেও দেশটির কোনো সুনির্দিষ্ট ওয়াচলিস্ট নেই। এ ছাড়া তাদের কোনো মিথস্ক্রিয়ামূলক এপিআই সিস্টেম নেই। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বাংলাদেশ পুলিশের অন্য সব সংস্থা সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান ও গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। এসব অভিযানে অনেক সন্দেহভাজন নিহত হয়েছে, অনেক সময় এগুলোকে ‘ক্রসফায়ার’ বা ‘শুটআউট’ বলে অভিহিত করা হয়। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচির সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে এবং সংকট মোকাবিলা, প্রমাণ সংগ্রহের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর