সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ব্যাংকিং খাত

অনিয়ম বন্ধে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ

ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুযোগ হাই কোর্টে বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

ব্যাংকিং খাতের ঋণ অনুমোদন ও আদায়ে দুর্বলতা খুঁজে বের করে তার প্রতিকারে সুপারিশ করার জন্য ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে তা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে গতকাল বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়। এ ছাড়া ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুসারে সুবিধা নেওয়ার জন্য আবেদন করার সময়সীমা আরও ৯০ দিন বাড়িয়ে দিয়েছে হাই কোর্ট। তবে পুনঃতফসিলের সুবিধাভোগীদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১২ সালের জারি করা ‘মাস্টার সার্কুলার অন লোন রিশিডিউলিং’-এর বিধি নিষেধ অনুসরণ করতে হবে। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, রক্ত যেমন মানুষের শরীরের একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশ এবং হার্ট হলো ওই রক্তের সঞ্চালন যন্ত্র, তেমনি অর্থ হলো অর্থনীতির চালিকা শক্তি যেখানে ব্যাংকগুলো হার্টের ভূমিকা পালন করে। সুতরাং ব্যাংক খাতে অনিয়ম থাকলে দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনেই তা অতিদ্রুত দূর করা প্রয়োজন। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে আজমালুল হোসেন কিউসি, শামীম খালেদ আহমেদ ও ব্যারিস্টার মুনীরুজ্জামান, ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষে শাহ মঞ্জুরুল হক এবং দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, নয়জন বিশেষজ্ঞ দিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে রায়ে। সেই কমিটি সরকারি বেসরকারি সব ব্যাংকের যে দুর্বলতা, বিশেষ করে ঋণ পরিশোধ, ঋণ অনুমোদন এবং সংগ্রহে অনিয়মসহ সব বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং করবে। আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, আদালত কমিশন গঠনে সরকারের প্রতি কোনো নির্দেশনা দেননি। শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি কমিটি করতে বলেছে। উল্লেখ্য, গত ২৮ জুন আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠন এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট সংক্রান্ত জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটর্স অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট আবেদনে হাই কোর্ট গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে রুল জারি করা হয়। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না ও এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। ওই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষেই গতকাল রায় দেয় হাই কোর্ট।

সর্বশেষ খবর