সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বায়রার কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চায় মন্ত্রণালয়

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার সম্পর্কে দেশটির দুটি মন্ত্রণালয়কে দেওয়া বায়রা মহাসচিবের চিঠির ব্যাখ্যা চেয়েছে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে বায়রাকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে এ ব্যাখ্যা চেয়েছেন মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। এর আগে এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছিল রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সংগঠন বায়রা। বন্ধ শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে দুই দেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের ঠিক আগে দেওয়া বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমানের এই চিঠির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন্ উঠেছিল দুই দেশেই। গত ৩১ অক্টোবর বায়রা সভাপতি বরাবর লেখা মন্ত্রীর চিঠিতে বলা হয়, বায়রার পক্ষ থেকে আলোচনাধীন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটা অত্যন্ত অনৈতিক একটি কাজ। বায়রার দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যেও এটি পড়ে না। এতে বলা হয়, মালয়েশিয়ার কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণই তাদের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের বিষয় হলেও এ ব্যাপারে বায়রার চিঠিতে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেখানে শ্রমবাজারে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে নিজ নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করে আলোচনা করছে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকার। দুই দেশ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় থাকা অবস্থায় বায়রার এ ধরনের যোগাযোগে দেশের স্বার্থ ক্ষুণœ হতে পারে। এটা দ্বিপক্ষীয় ও কূটনৈতিক সম্পর্কের সব নিয়মেরই বাইরে। বায়রার চিঠি চলমান আলোচনার প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের কোনো ক্ষতিসাধন করতে পারবে না বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। জানা যায়, গত ২৭ অক্টোবর মালয়েশিয়া সরকারের দুই মন্ত্রীকে চিঠি দেন বায়রার মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান। চিঠিতে কর্মী নিতে মালয়েশিয়া সরকার যেই অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করছে তা গ্রহণযোগ্য নয় বলে মতামত দেন। একই সঙ্গে অন্য প্রতিষ্ঠানকে এই দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন। ইংরেজিতে লেখা দুই পৃষ্ঠার ঠিঠিতে বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকার অভিবাসনের পদ্ধতি সমন্বয় করার লক্ষ্যে কতিপয় পন্থা গ্রহণ করেছে, যা বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন, তাই অন্তর্বর্তী সময়ে আমরা পুরনো পদ্ধতি চালু করার জন্য সুপারিশ করছি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিনের আলোচনার পর আবারও মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল দালালদের অপতৎপরতা। তাই এবার শুরু থেকেই মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কঠোরতা অবলম্বন করা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যকার নানা বিষয়ের সমাধান করে শ্রমবাজারটি চালু করতে ৬ নভেম্বর বৈঠক করতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধি যাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে ভালো খবরের আশা করছেন মন্ত্রী ইমরান আহমেদ। মন্ত্রী বারবারই বলে আসছেন, ‘যেহেতু কর্মী নেবে তারা, তাই শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’ কিন্তু বায়রা মহাসচিবের  চিঠি সব ওলট-পালট করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চিঠিটি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং মালয়েশিয়া সরকার যা চাচ্ছে, এই চিঠি সেটার বিরোধিতা করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে শ্রমবাজার খোলার বিষয়টি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর