শিরোনাম
সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

দুর্নীতি ও আর্থিক দুষ্টচক্র ভাঙতে পারেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি ও আর্থিক দুষ্টচক্র ভাঙতে পারেন প্রধানমন্ত্রী

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশের আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও অর্থনীতির দুষ্টচক্র ভাঙতে পারেন সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার মতে, ফৌজদারি ব্যবস্থায় দুর্নীতি দূর করার সীমাবদ্ধতা অনেক। আর অর্থনৈতিক গতিশীলতার জন্য যে সমন্বয় দরকার, তার বড় অভাব দেখছি।

গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সিপিডি আয়োজিত অর্থনীতির হালনাগাদ পরিস্থিতি ‘২০১৯-২০ অর্থবছর : প্রারম্ভিক মূল্যায়ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা বলেন সংস্থাটির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এতে চার ভাগে বিভক্ত মূল বক্তব্য উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন সিপিডির আরেক বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। সংবাদ সম্মেলনে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে গতিশীলতা, যে সংযুক্তি, যে সমন্বয় দরকার সেটার ক্ষেত্রে আমরা অভাব অনুভব করছি। এখন খুব বড়ভাবে একটা একনীতিকেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনা চলছে। অর্থাৎ সরকার রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগনীতি ভিত্তিক একটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে প্রবেশ করেছে। পুরোটাই হলো রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ এবং অবকাঠামো বিনিয়োগ। এটার সঙ্গে ব্যক্তি বিনিয়োগের সম্পর্ক খুবই দুর্বল। রাজস্ব আদায়ের সম্পর্ক খুবই দুর্বল। মুদ্রানীতির, টাকার মূল্যমানের যে ওঠানামা সেটার সঙ্গেও সম্পর্ক খুব দুর্বল। অন্যান্য বাণিজ্য নীতিরও সম্পর্ক অত্যন্ত দুর্বল। অর্থাৎ এই যে সামষ্টিক অর্থনীতি বা উন্নয়ন অর্থনীতির নেতৃত্বমূলক ভূমিকা যে অর্থ মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে সেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বমূলক ভূমিকার ক্ষেত্রেও আমরা কিছুটা অভাব অনুভব করছি। তার মতে, নীতির সিদ্ধান্তগুলো অত্যন্ত কেন্দ্রায়িত হচ্ছে। অর্থাৎ, মন্ত্রণালয়ের পর্যায় থেকে, আরও উচ্চপর্যায় থেকে সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে, যার ফলে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে অথবা একটি একক নীতিনির্ধারক জায়গা হিসেবে মন্ত্রণালয়গুলোর ভূমিকা ক্রমান্বয়ে গৌণ হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে এক ধরনের অস্বীকৃতির মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে। এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, প্রবৃদ্ধি এখন সুতা কাটা বেলন বা ঘুড়ির মতো। বাস্তবতার সঙ্গে সুতার যে সংযোগ থাকে সেটা এখানে নেই। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক উন্নয়নের যে উপাখ্যান তৈরি হয়েছে তা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের শত্রুতে পরিণত হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ মোট দেশজ উৎপাদন- জিডিপি’র ২২ থেকে ২৩ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। অথচ প্রবৃদ্ধি ৫ থেকে ৮ শতাংশ হয়েছে। বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহও সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে কম। আবার ব্যক্তিরা ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে পারছেন না। তাঁরা বলছেন, লাভ করতে পারছেন না। পুঁজিপণ্য আসা নেতিবাচক হয়ে গেছে। সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চারটি প্রধান সমস্যার বিস্তারিত তুলে ধরে সিপিডি। এগুলো হলো রাজস্ব আদায়ে গতি কম, ব্যাংক খাতের দুর্দশা, শেয়ারবাজারে সংকট এবং বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে ঝুঁকি। সংস্থাটির মতে- ভ্যাট আইনে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাংক খাতের ঋণখেলাপিদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর