সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

৪৭ মিনিটেই হেরে গেল টাইগাররা

আসিফ ইকবাল, কলকাতা থেকে

ছুটির দিন। পরিবারকে সময় দেওয়ার মোক্ষম সুযোগ। কিন্তু কলকাতাবাসী সেই পথে হাঁটেনি। গোলাপি বলের দিবারাত্রির ঐতিহাসিক টেস্টের সাক্ষী হতে গোটা পরিবার নিয়ে সকাল সকাল হাজির ‘নন্দনকানন’ ইডেনে। ট্রাম, বাস, ট্যাক্সিতে চড়ে দেড়শ বছরের পুরনো ইডেনে হাজির হওয়ার পথে তাদের প্রার্থনা একটাই, মুশফিকুর রহিমরা যেন দৃঢ়তার পরিচয় দেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলেন উমেশ যাদব, ঈশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ সামিদের গতি, সুইং ও বাউন্সের বিপক্ষে। পাল্টা আক্রমণে যেন ফিরিয়ে আনেন ১৮ বছর আগের ভিভিএস লক্ষ্মণ-রাহুল দ্রাবিড়ের ঐতিহাসিক সুখস্মৃতি! কলকাতার সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও মনেপ্রাণে চাইছিলেন, দ্রাবিড়ের দৃঢ়তা ও লক্ষ্মণের শিল্প যেন ভর করে মুশফিকের ওপর! কিন্তু পূরণ হয়নি ক্রিকেটপ্রেমীদের স্বপ্ন। হতাশায় পুড়েছেন। হতবিহ্বল হয়েছেন। ছুটির দিনকে জলাঞ্জলি দিয়ে মাঠে ছুটে আসা ভারতীয় দর্শকরা স্টেডিয়াম ছাড়েন টানা সপ্তম জয়ের উৎসব করতে করতে। বিপরীত চিত্র বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। মাত্র ৪৭ মিনিটে ও ৫২ বলে অসহায় হারের বেদনায় নীল হয়েছেন। যাদবের রুদ্রমূর্তিতে লক্ষ্মণ হতে পারেননি মুশফিক। থেমেছেন ৭৪ রানে। তাই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ৪৬ রানে। এ নিয়ে ভারতের বিপক্ষে চতুর্থবার হারল ইনিংস ব্যবধানে এবং টানা তৃতীয় টেস্ট হেরে নতুন করে শেখার প্রত্যাশা করলেন মুমিনুলরা।

ইন্দোরে মুমিনুলরা ইনিংস ও ১৩০ রানে হেরেছিলেন তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে। এবার ইডেনে হারলেন আরও আগে, দিনের নবম ওভারে। গোলাপি বলের গতি, বাউন্স ও সুইংয়ে দিনের প্রথম বল থেকেই অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছিল টাইগার ব্যাটসম্যানদের। আগের দিনের ৬ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে খেলতে নেমে দিনের দশম বলে যাদবের বাউন্সারে মুখ বাঁচাতে ঋদ্ধিমানের গ্লাভসবন্দী হন এবাদত। এরপর আল আমিনকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে মুশফিক চেষ্টা করেছিলেন ব্যবধান কমাতে। কিন্তু দলীয় ১৮৪ রানে যাদবের উইকেটের বাইরের বলকে অহেতুক খেলতে গিয়ে ‘নায়ক’ হতে পারেননি। না পারলেও উঁচু মানের বোলারদের বিপক্ষে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দেন সাবেক অধিনায়ক। অথচ সম্ভাবনা ছিল ৬৯ টেস্ট ক্যারিয়ারের সাত নম্বর সেঞ্চুরি তোলার। উইকেটের বাইরের বলকে আলগা শটস খেলে ব্যক্তিগত ৭৪ রানে ফেরার আগে ৯৬ বলে ১৩ চারের ইনিংসটি দিয়ে সতীর্থদের শেখার সুযোগ করে  দেন ‘মুশি’। তার বিদায়ের পর খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি দল। থেমে যায় ১৯৫ রানে।

প্রথম ইনিংসে টাইগার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে গতি, বাউন্স ও সুইংয়ে দিশাহারা করেছিলেন ঈশান্ত। ১০৬ রানে গুটিয়ে তুলে নিয়েছিলেন ২২ রানের খরচে ৫ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও নতুন বলে ব্যতিব্যস্ত করে শুরুতেই তুলে নেন ৪ উইকেট। কাল মুমিনুল বাহিনীর লেজ মুড়ে দেন যাদব রিভার্স সুইংয়ের পাশাপাশি বাউন্সারে। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা ঈশান্ত। কম যাননি যাদবও। প্রথম ইনিংসে ৩টির পর দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। আশ্চর্য হলেও সত্যি, দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে নেওয়ার সুযোগই পাননি সামি। সব মিলিয়ে ১২ টেস্টে ভারতের বিপক্ষে দশম হার এবং ইনিংস ব্যবধানে চার নম্বর।

সর্বশেষ খবর