বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

একনেকে ৭ হাজার ৩১২ কোটি টাকার ৬ প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৭ হাজার ৩১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৭৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৩২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার ২১২ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ থেকে জোগান দেওয়া হবে। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ঢাকা ও পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রিড সঞ্চালন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে সভার পর সিদ্ধান্তগুলো সাংবাদিকদের জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। ঢাকা ও পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রী বলেন, ঢাকা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলে আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সঞ্চালন ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে সবার কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সঞ্চালন লাইনের ব্যাপক উন্নয়নের যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার, তার ধারাবাহিকতায় এ প্রকল্প। মোট ৫ হাজার ৯৪৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে রাষ্ট্রায়ত্ত পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। এ ব্যয়ের মধ্যে ৪ হাজার ২১২ কোটি টাকা বিদেশি উৎস, এক হাজার ৪১৬ কোটি টাকা সরকারের তহবিল ও ৩২১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে। প্রকল্পটির প্রস্তাবনায় বলা হয়, ঢাকা বিভাগের ডেসকোর অধীনের এলাকা ছাড়াও ফরিদপুর, মাদারীপুর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এলাকার সঞ্চালন অবকাঠামো শক্তিশাল করা হবে। বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠি ও পটুয়াখালীর; খুলনা বিভাগের বাগেরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও সাতক্ষীরা; রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ এবং রংপুর বিভাগের দিনাজপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায়ও এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক সভায় মোট ৭ হাজার ৩১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২ হাজার ৭৭৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৩২১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং ৪ হাজার ২১২ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ থেকে জোগান দেওয়া হবে।

অনুমোদিত প্রকল্প : ১৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পলবাড়ি-দড়াটানা-মনিহার-মুড়ালী জাতীয় মহাসড়কে মনিহার থেকে মুড়ালী পর্যস্ত ৪ লেনে উন্নীতকরণ। ২৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বগুড়া-সারিয়াকান্দি জেলার মহাসড়ক উন্নয়ন ও বাঙ্গালী নদীর ওপর আড়িয়ারঘাট সেতু নির্মাণ। ৭২৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মাগুরা-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁক সরলীকরণসহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ। ৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ফেনী (মাস্টারপাড়া) আলোকদিয়া-ভালুকিয়া-লস্করহাট-ছাগলনাইয়া জেলা মহাসড়কটি যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ। ২০৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নাটোর রোড থেকে রাজশাহী বাইপাস পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা নিয়ে বই : পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত মহাজোট সরকারের প্রথম একনেক বৈঠক থেকে গত ২৫ জুনের বৈঠক পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী যত নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সব নির্দেশনা নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। সেটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন- এটা অবশ্য পালনীয়। এখন থেকে প্রকল্প প্রস্তাবনা প্রস্তুত করার সময় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা তা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দেখতে হবে।

সর্বশেষ খবর