মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জি কে শামীমের এক কোটি ৮৮ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত

ফের তিন দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

টেন্ডারবাজির সম্রাট জি কে শামীমের প্রায় এক কোটি ৮৮ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে আদালত। এর মধ্যে এক কোটি ৮১ লাখ ২৪ হাজার টাকা আর বাকি ৯ হাজার ডলারের সমপরিমাণ মূল্যের। গত ১৮ নভেম্বর আদালত এসব টাকা বাজেয়াপ্তের আদেশ দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। চলতি মাসের শেষের দিকে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে করা মানি লন্ডারিং মামলারও চার্জশিট দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। গতকাল তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও তিন দিনের তৃতীয় দফা রিমান্ডে নিয়ে এসেছে সিআইডি।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ইমতিয়াজ আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, জি কে শামীমের সব তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পরই তার ওইসব টাকা রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এমনকি বিদেশেও তার অর্থ পাচারের তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে সেই টাকার পরিমাণ ও দেশগুলোর নাম আমরা প্রকাশ করছি না। এর আগে র‌্যাব-পুলিশের দুই দফায় অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং মামলায় ১৯ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়। ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে ক্যাসিনো-জুয়াবিরোধী অভিযানের মধ্যে গত ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে শামীমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নগদ প্রায় দুই কোটি টাকা, পৌনে দুইশ কোটি টাকার এফডিআর, আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব। তখন শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকেও গ্রেফতার করা হয়। পরদিনই শামীমের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, অস্ত্র ও মাদক আইনে তিনটি মামলা হয় গুলশান থানায়।

এরপরই ক্যাসিনো কান্ডে  গ্রেফতার হওয়া খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, জি কে শামীম, সেলিম প্রধানসহ ছয়জনের সম্পদের খোঁজে ২৪ সংস্থাকে চিঠি পাঠানো শুরু করে সিআইডি। এর মধ্যে জি কে শামীমের সম্পদের তথ্য সংবলিত প্রায় ২ হাজার নথিপত্র সরবরাহ করে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জয়েন্ট স্টক কোম্পানি লিমিটেড ও আবাসন খাতে ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবসহ অন্তত ১৫টি সংস্থার কাছ থেকে তথ্য পাওয়া যায় বলে জানা গেছে। প্রাপ্ত এসব নথিতে জি কে শামীমের হাজার কোটি টাকার বেশি সম্পদের তথ্য রয়েছে। তারা ওই সব নথি দেখে সম্পদের একটি তালিকাও করেছে। তালিকায় থাকা সম্পদগুলোর তথ্যের সঙ্গে জি কে শামীমের দেওয়া তথ্যে যাচাই করা হয়। এসব তথ্যে গরমিল পাওয়ায় তাকে আবারও রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জি কে শামীম নিজের জিকে বি অ্যান্ড কোম্পানির নামে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ নিলেও আরও ৫টি কোম্পানির নামে অন্তত আরও ২০ হাজার কোটি টাকার টেন্ডার বাগিয়ে নিয়েছিলেন। ওই কোম্পানিগুলোতেও তার রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শেয়ার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- জামাল কনস্ট্রাকটিং লি., পদ্মা কনস্ট্রাকশন, মজিদ অ্যান্ড সন্স, হাসান অ্যান্ড সন্স ও পায়েল কনস্ট্রাকশন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর